ঢক ঢক করে পানি খান? এই অভ্যাস বদলালে যেসব উপকার পাবেন
পানি বা যেকোনো পানীয় গ্রহণের অভ্যাস আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। অনেকেই তৃষ্ণা পেলেই দ্রুত একবারে অনেকটা পানি পান করেন, যাকে সাধারণভাবে ‘ঢক ঢক করে পানি খাওয়া’ বলা হয়। যদিও এতে তৎক্ষণাৎ তৃষ্ণা মেটে, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এই অভ্যাস শরীরের জন্য সবসময় উপকারী নয়। বরং ধীরে ধীরে বা চুমুক দিয়ে পানি পান করলে শরীর তা ভালোভাবে শোষণ করতে পারে এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও বেশি পাওয়া যায়। দ্রুত পানি পানের তুলনায় ধীরে পানি পান করার বিষয়ে বিজ্ঞান কী বলছে, তা নিয়েই এই প্রতিবেদন। ১. পানির সঠিক শোষণ ও ব্যবহার পানি পানের ধরন শরীর কতটা কার্যকরভাবে পানি ব্যবহার করবে, তা নির্ধারণ করে। ধীরে শোষণের সুবিধা দ্রুত অনেকটা পানি পান করলে শরীর সেই পরিমাণ পানি সঙ্গে সঙ্গে শোষণ করতে পারে না। ফলে পানি দ্রুত কিডনিতে চলে গিয়ে প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। এতে প্রকৃত অর্থে ডিহাইড্রেশন পুরোপুরি কাটে না। অন্যদিকে, ধীরে ধীরে বা চুমুক দিয়ে পানি পান করলে তা লালাগ্রন্থি থেকে শুরু করে পরিপাকতন্ত্রের প্রতিটি ধাপে ভালোভাবে শোষিত হওয়ার সুযোগ পায়। ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য হঠাৎ করে অনেক পানি পান করলে রক্তে
পানি বা যেকোনো পানীয় গ্রহণের অভ্যাস আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। অনেকেই তৃষ্ণা পেলেই দ্রুত একবারে অনেকটা পানি পান করেন, যাকে সাধারণভাবে ‘ঢক ঢক করে পানি খাওয়া’ বলা হয়।
যদিও এতে তৎক্ষণাৎ তৃষ্ণা মেটে, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এই অভ্যাস শরীরের জন্য সবসময় উপকারী নয়। বরং ধীরে ধীরে বা চুমুক দিয়ে পানি পান করলে শরীর তা ভালোভাবে শোষণ করতে পারে এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও বেশি পাওয়া যায়।
দ্রুত পানি পানের তুলনায় ধীরে পানি পান করার বিষয়ে বিজ্ঞান কী বলছে, তা নিয়েই এই প্রতিবেদন।
১. পানির সঠিক শোষণ ও ব্যবহার
পানি পানের ধরন শরীর কতটা কার্যকরভাবে পানি ব্যবহার করবে, তা নির্ধারণ করে।
ধীরে শোষণের সুবিধা
দ্রুত অনেকটা পানি পান করলে শরীর সেই পরিমাণ পানি সঙ্গে সঙ্গে শোষণ করতে পারে না। ফলে পানি দ্রুত কিডনিতে চলে গিয়ে প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। এতে প্রকৃত অর্থে ডিহাইড্রেশন পুরোপুরি কাটে না। অন্যদিকে, ধীরে ধীরে বা চুমুক দিয়ে পানি পান করলে তা লালাগ্রন্থি থেকে শুরু করে পরিপাকতন্ত্রের প্রতিটি ধাপে ভালোভাবে শোষিত হওয়ার সুযোগ পায়।
ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য
হঠাৎ করে অনেক পানি পান করলে রক্তে লবণের ঘনত্ব কমে যেতে পারে। শরীর তখন ভারসাম্য বজায় রাখতে অতিরিক্ত পানি প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়, যার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইটও বেরিয়ে যায়। ধীরে পানি পান করলে এই ভারসাম্য স্বাভাবিক থাকে।
২. হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি
ধীরে পানি পান করা হজমের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
লালার সঙ্গে মিশ্রণ
চুমুক দিয়ে পানি পান করার সময় লালা পানির সঙ্গে মেশে। লালা হজম প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ এবং এতে অ্যালকালাইন গুণ রয়েছে। এটি পাকস্থলীর pH ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায়।
হজম দুর্বল হওয়া এড়ানো
খাবারের ঠিক আগে বা পরে ঢক ঢক করে পানি পান করলে পাকস্থলীর হজমকারী অ্যাসিড পাতলা হয়ে যায়, ফলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ধীরে পানি পান করলে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
৩. স্নায়ুতন্ত্রের ওপর ইতিবাচক প্রভাব
পানি পানের ধরন মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলে।
ভ্যাগাস স্নায়ুর সক্রিয়তা
ধীরে ও সচেতনভাবে চুমুক দিয়ে পানি পান করলে ভ্যাগাস স্নায়ু সক্রিয় হয়, যা প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে। এর ফলে শরীর ‘রেস্ট অ্যান্ড ডাইজেস্ট’ অবস্থায় যায়, মানসিক চাপ কমে এবং শরীর শান্ত থাকে। দ্রুত পানি পান করলে এই উপকার পাওয়া যায় না।
৪. অন্যান্য উপকারিতা
হিক্কা ও ঢেঁকুর কমে: দ্রুত পানি পান করার সময় অনেক বাতাস পেটে ঢুকে যেতে পারে, যা হিক্কা বা ঢেঁকুরের কারণ হয়। ধীরে পানি পান করলে এ সমস্যা কম হয়।
তৃষ্ণা দীর্ঘসময় মেটে: দ্রুত পানি পান করলে তৃষ্ণা সাময়িকভাবে মেটে। কিন্তু ধীরে পান করা পানি শরীরে ভালোভাবে শোষিত হওয়ায় দীর্ঘসময় শরীর আর্দ্র থাকে।
৫. শেষ কথা
পানি যেমন জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য, তেমনি পানি পানের সঠিক পদ্ধতিও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ঢক ঢক করে দ্রুত পানি পান করার বদলে ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে পানি পান করলে শরীরের পানিশোষণ ভালো হয়, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং মানসিক চাপও কমে। সুস্থ থাকতে তাই পানি পানের অভ্যাসে সচেতন হওয়াই সবচেয়ে কার্যকর পথ।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
What's Your Reaction?