ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে ‌‘রসের কুটুম’ ছবির ২ প্রদর্শনী

2 days ago 3

খেজুরের রস সংগ্রহ করে তা দিয়ে তৈরি করা হয় গুড়। যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত গ্রামের ভাষায় তাদের বলে গাছি। গুড় তৈরির জন্য মাসের পর মাস বাড়ি থেকে দূরে খোলা জায়গায় তাঁবু অথবা টিনের ঘর বানিয়ে থাকতে হয় এই গাছিদের। কুয়াশায় শীতের রাতে কাঁপতে কাঁপতে গাছে উঠে রস নামায় তারা। আলো ফোঁটার আগেই সনাতন পদ্ধতিতে খেঁজুর/পাটালি গুড় বানাতে শুরু করেন এই কারিগররা। যখন খেঁজুরের রস গাঢ় সোনালী রং নিয়ে গুড়ে রুপান্তরিত হয়, দেখতে বেশ নান্দনিক লাগে।

বাঙালির জীবনে খেজুরের গুড় যেমন একটি মুখরোচক খাবার তেমনি ইতিহাস-ঐতিহ্য কিংবা আবহমান বাংলার গ্রামীন সংস্কৃতিতে এর ভূমিকা অনেক। আর তার সবটা জুড়েই মিশে থাকেন রস সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে গুড় বানানোর পর্যন্ত যুক্ত কারিগরেরা। গুড় তৈরির গল্প ও গাছিদের জীবনযাত্রা নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করেছেন ঝুমুর আসমা জুঁই। এ ছবির নাম ‘রসের কুটুম’।

চলমান ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে ছবিটি। নির্মাতা ঝুমুর আসমা জুঁই এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, উৎসবে ২দিন প্রদর্শিত হবে ‘রসের কুটুম’।

সিনেমা বক্স প্রযোজিত ছবিটির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হবে ১৪ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টায়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে হবে প্রদর্শনী। এরপর জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় দেখা যাবে ‘রসের কুটুম’।

ছবির নির্মাতা ঝুমুর আসমা জুঁই বলেন, ‘খেজুর রসের কারবার এ অঞ্চলের মানুষের অন্তত দুইশ বছরের প্রাচীন, তা বেশ কিছু বইয়ে উল্লেখ রয়েছে। দ্য ডেট সুগার ইন্ডাস্ট্রি অব ইন্ডিয়া বইয়ে উল্লেখ রয়েছে, ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে প্রথমবারের মতো খেজুরের গুড় ব্রিটেনে পাঠানো হয়। এই গুড়ের চাহিদা পশ্চিমা দেশগুলোতে বেশ রমরমা ছিল। খেজুরের গুড় তৈরির ইতিহাসকে ধরে রাখার তাগিদ অনুভব করলে গুড় তৈরির এই সনাতন পদ্ধতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতেই হবে। কষ্টের বিষয় হলো গুড় তৈরির জার্নিতে যে পরিশ্রম হয় তার প্রতিদান কারিগররা কখনো পান না। ইতিহাস বা ঐতিহ্যেও এই কারিগরদের খুব একটা গুরুত্বের সাথে উপস্থাপন করা হয় না। সেই ভাবনা থেকেই আমি সিনেমাটি নির্মাণ করেছি। আমাদের যা কিছু নিজস্ব সেসব পৌঁছে যাক বিশ্বজুড়ে।’

তিনি বলেন, ‘খেজুরের গুড়ের গুণগত মান কিন্তু আকর্ষণীয়। খেঁজুরের রস ও গুড় বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এতে দেশ ও গুড়ের কারিগর উভয়ই উপকৃত হবে। তাই পণ্য হিসেবে খেজুরের রস এবং এই পেশায় যুক্তদের প্রতি আমাদের মনযোগ প্রয়োজন।’

এলআইএ/জিকেএস

Read Entire Article