ঢাকা-মাওয়া রুটে যাত্রী চাপ বেশি, বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ

3 months ago 9

ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। শুক্রবার (৬ জুন) ভোর থেকেই সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়।

বরিশাল, খুলনা, বেনাপোল, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও রাজবাড়ী জেলাসমূহের মানুষ ঘরে ফিরছেন যে যার মতো করে।

বাস কাউন্টার এবং অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের চেয়ে ঈদের আগের দিন আজ বাস টার্মিনালে যাত্রীদের ভিড় বেশি।

এদিকে, টিকিট সংকট না থাকলেও প্রায় প্রতিটি রুটেই বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। দাঁড়িয়ে গেলে ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ২০০ টাকা আর সাতক্ষীরা, যশোর, বরিশাল ও খুলনায় দাঁড়িয়ে গেলে ৭০০ টাকা ভাড়া।

শুক্রবার (৬ জুন) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও জনপথের মোড়ে আন্তঃজেলা বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীদের ভিড়। প্রায় প্রতিটি কাউন্টারেই টিকিট নিয়ে চলছে দরদাম। দর কষাকষির মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে টিকিট।

যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, ঈদ এলেই ভাড়া বেড়ে যায়। দু-একটি পরিবহন ছাড়া কোথাও টিকিটের সংকট নেই। তবুও কিছু পরিবহন মূল ভাড়ার চেয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশিতে টিকিট বিক্রি করছে। বেশিরভাগ পরিবহন দ্বিগুণের বেশি দামে টিকিট বিক্রি করছে। একসঙ্গে তিন-চারজন গেলে দামাদামি করে কিছু টাকা কম নিচ্ছে।

ঢাকা-মাওয়া রুটে যাত্রী চাপ বেশি, বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ

বরিশাল রুটে চলাচল করে মিজান পরিবহন। এ রুটের পটুয়াখালীতে অন্য মৌসুমে ভাড়া ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা। তবে ঈদ আসায় গত বৃহস্পতিবার থেকে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় টিকিট কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। বরিশালের সাকুরা পরিবহনে ১২০০ টাকা ভাড়ায় ডাকছেন যাত্রীদের। কাছের যাত্রার মধ্যে মাওয়া রোডে পাঁচ্চর,ভাঙ্গা, ফরিদপুর, মাদারীপুর রাজবাড়ী ও শরীয়তপুরে ৫০০ টাকা মাথাপিছু ভাড়া নিচ্ছে। এছাড়া ওই রোডে পরিবহন ট্রান্স সিলভা, রাইদা ও গাবতলী মেড়িবাস সার্ভিস দিচ্ছে। শরীয়তপুর এবং ভাঙ্গা ফরিদপুর পর্যন্ত ৫০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে জনপ্রতি।

এ রোডের যাত্রী আমিনুল জাগো নিউজকে বলেন, পরিবার নিয়ে বাড়ি যাবো। দরদাম করে টিকিট কিনতে হচ্ছে। যে-যেভাবে দরদাম করতে পারে। কেউ ৫০-১০০ টাকা বেশি।

একই অবস্থা গ্রিন সেন্টমার্টিন পরিবহনে, বরিশালে যাত্রীপ্রতি ভাড়া নিচ্ছে ৯০০ টাকা করে।

ফরিদপুরগামী সাউদিয়া পরিবহনের ঈদ মৌসুমে ভাড়া এখন ৮০০ টাকা। অন্য সময়ে এ পরিবহনে ভাড়া ৫০০ টাকা। ইমাম হোসেন নামে এক যাত্রী জানান, এ গাড়ি সাতক্ষীরা পর্যন্ত যায়। ফরিদপুর পর্যন্ত যেতেও একই ভাড়া নিচ্ছে।

গোপালগঞ্জের যাত্রী রাফিউল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এলাকায় বাসে ঈদ ছাড়া মৌসুম ছাড়া ভাড়া সাড়ে ৩০০ বা ৪০০ টাকা। এখন এক ৭৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিবার নিয়ে ঈদে বাড়ি আসা-যাওয়াতে কয়েক হাজার টাকা শেষ।

ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সায়েদাবাদে ইকোনো কাউন্টারের ম্যানেজার জাগো নিউজকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে মালিকের নির্দেশনায় ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ঈদের তিনদিন পর আবারও আগের মতোই ভাড়া নেওয়া হবে।

১০০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে নোয়াখালীর চাটখিলগামী হিমালয় ও আল বারাকা পরিবহনে। অন্য সময় ৫০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার থেকে এ রুটে ভাড়া ৬০০ টাকা করা হয়েছে।

নড়াইলগামী যাত্রী আব্দুস সালাম জানান, যাত্রাবাড়ী-নড়াইল রুটে স্বাভাবিক সময়ে ৪০০-৪৫০ টাকা ভাড়া নেওয়া হলেও এখন ৮০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। দাঁড়িয়ে গেলেও জনপ্রতি দিতে হচ্ছে ৫০০ টাকা। যাত্রাবাড়ী টু যশোর রুটে ৫০০-৫৫০ টাকা ভাড়া হলেও এখন জনপ্রতি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা। এমনকি দাঁড়িয়ে গেলেও দিতে হচ্ছে ৭০০ টাকা।

ঢাকা-মাওয়া রুটে যাত্রী চাপ বেশি, বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ

ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে কয়েকটি বাস কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতারা জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, ঈদে ২০০-১০০ টাকা ভাড়া বেশি, এটা স্বাভাবিক। এখন ভাড়া কম রাখার সুযোগ নেই।

তাদের দাবি, এখন রাজধানী থেকে যে বাসগুলো যাচ্ছে সেগুলো আবার খালি ফিরে আসছে। তাই ক্ষতিপূরণে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তবে দ্বিগুণ বা তার বেশি নেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তারা কথা বলতে রাজি হননি।

ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে সেন্টমার্টিন পরিবহনের টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ‘কথা বলার সময় নেই’ বলে সাফ জানিয়ে দেন।

এফএইচ/এসএনআর/এএসএম

Read Entire Article