ঢাবিতে মঞ্চায়নের অপেক্ষায় মহিউদ্দিন রনির ‘সব পাওয়ার মন্ত্র’

1 month ago 11

মহিউদ্দিন রনি; বাংলাদেশের অন্যতম পরিচিত মুখ। যাকে দেখা যায় বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের প্রথম সারিতে এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে। তিনি এবার মঞ্চনাটক নিয়ে হাজির হচ্ছে দর্শকদের সামনে। যেটি তিনি নিজেই নির্দেশনা দিয়েছেন এবং অভিনয় করেছেন।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের আয়োজনে ১৮তম কেন্দ্রীয় নাট্যোৎসবের সমাপনী দিনে মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে মহিউদ্দিন রনির নির্দেশনায় নির্মিত সেই নাটক ‘সব পাওয়ার মন্ত্র’। 

এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নাটকটি ঢাবির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে মঞ্চস্থ হবে। এবারের নাট্যোৎসবে বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের নির্দেশনায় সর্বমোট ১৮টি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে, যা তাদের পরীক্ষার অংশ।

বর্ষিয়ান নাট্যকার যতীন সরকার রচি নাটক ‘সব পাওয়ার মন্ত্র’ অবলম্বন করে, ২০২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাকে সিম্বোলিকভাবে সংশ্লেষ ঘটিয়ে বিনির্মিত হয়েছে নাটকটি।

নির্দেশনার পাশাপাশি নাটকে অভিনয় করবেন মহিউদ্দিন রনি। এ ছাড়াও নাটকটিতে মঞ্চে দেখা যাবে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা আফরিন মীম, সাদমান মুবতাসিম আদীব, আনজীর আব্দুল্লাহ, সানজিদা জামান স্নেহা, খালিদ মাহমুদ খান আবির, চন্দ্রিমা রানী পাল, নুসরাত জাহান সাদিয়া, মাহির ইবনে ওমর, নাফিসা মালিয়াত সাবা, সুমাইয়া সোহা, শেখ মুমতারিণ অথৈ, শান্তা আক্তার, মেজবাহুল ইসলাম, নীহারিকা নীরা, আজরিনা শারমিন, চয়ন মন্ডল, আবু সাঈদ, বিজয় চন্দ্র, তানজিমা পাঠান, সামিয়া ইয়াসমিন, কথক বিশ্বাস, অহিদুজ্জামান টনি, আরিফ হাসানসহ আরও অনেককেই।

নাটকটির প্রেক্ষাপট ও নির্মাণ সম্পর্কে নির্দেশক এবং অভিনেতা মহিউদ্দিন রনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানের মূল্যবোধকে ধারণ করে ও সাহসী বীরদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে রূপকআশ্রিত এই নাটক। এর মাধ্যমে সারা পৃথিবীর সকল ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি, প্রবাহ এবং তার পতনের প্রেক্ষাপটকে প্রতিকীরূপে অঙ্কিত হয়েছে। বিশ্বাস রাখি নাটকটি উপভোগ করার মধ্য দিয়ে একজন দর্শক বিপ্লবের মন্ত্র শিখবে। জুলাই অভুত্থানে তার ভূমিকা কি ছিল সে তা খুঁজে পাবে এবং পরবর্তীতে তার করণীয় বিষয় কি? তার মনে সেই প্রশ্নের উদ্রেক ঘটাবে। পুরো প্রেক্ষাপটটি সারা বিশ্বের সার্বজনীন বিপ্লব সৃষ্টির কারণ এবং সে জনস্রোত কোথায় গিয়ে সমাপ্ত হবে তা অতি নাটকীয়ভাবে সেই প্রশ্নটি তোলার মাধ্যমেই নাটকটি শেষ হয়। 

তিনি বলেন, নাটকটিতে দেখা যাবে, কল্পিত স্থান অচলগিরি, যেখানে রাজতন্ত্র চলমান, সেই রাজ্যের রাজার হঠাৎই একদিন ‘সূর্য’ দেখার প্রবল বাসনা তৈরি হয়। সেই তাড়না থেকে, অচলগিরি রাজ্যের প্রজাদের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম অবলম্বন একটি পাহাড়, সেই পাহাড়টিকে রাজার একক আদেশে সরানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ফলশ্রুতিতে এই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে প্রবল প্রজাবিদ্রোহ। অন্যদিকে, এই বিদ্রোহকে পুঁজি করে ফায়দা হাসিল করারও চেষ্টা করে আরেক ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী এবং প্রজাদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে যুদ্ধবাজ দুষ্টচক্রকে ভেঙে ফেলে প্রতিষ্ঠিত হয় জনগনের শাসন। 

এ ছাড়াও নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন, সাদমান মুবতাসিম আদীব, আলোক প্রক্ষেপণে শেখ মুমতারিণ অথৈ, সংগীত পরিচালনায় নীহারিকা নীরা ও মেজবাহুল ইসলাম, পোশাক পরিকল্পনায় ফারজানা আফরিন মিম এবং দ্রব্যসামগ্রী পরিকল্পনায় সানজিদা জামান স্নেহা এবং খালিদ মাহমুদ খান আবির, মুখসজ্জায় তানজিমা পাঠান এবং সার্বিক সহায়তায় নুসরাত জাহান সাদিয়া, চন্দ্রিমা রানী পাল, মাহির ইবনে ওমর, নাফিসা মালিয়াত সাবা।

উল্লেখ্য, এবারের ১৮তম কেন্দ্রীয় বার্ষিক নাট্যোৎসব ৩রা ডিসেম্বর শুরু হয়েছে এবং বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের নির্দেশনায় সর্বমোট ১৮টি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। একইসঙ্গে থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ প্রতিষ্ঠার ত্রিশ বছর উদযাপন করছে।

Read Entire Article