ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় যা জানালো পুলিশ

9 hours ago 2

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে তোফাজ্জল হোসেন (৩০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া তদন্ত করে ঘটনার আদ্যোপান্ত বের করা হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) টিমও মাঠে কাজ করছে।

গ্রেফতার পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া (২৫), মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া (২১), পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন ও জিওগ্রাফির আল হোসেন সাজ্জাদ। গ্রেফতার অন্য শিক্ষার্থীর নাম আহসান উল্লাহ।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

তিনি বলেন, নিহতের সুরতহাল এবং পোস্টমর্টেম সম্পন্ন হয়েছে। মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যাকণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশের কাছে পাঁচজনকে হস্তান্তর করেছে। তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। যারা জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে।

কারা ঘটনা ঘটলো এবং ঘটনার সূত্রপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি সন্দেহজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই যুবককে ফজলুল হক মুসলিম হলের গেস্ট রুমে নিয়ে মারধর করা হয়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাত পৌনে ১টার দিকে ওই যুবককে মৃত ঘোষণা করা হয়।

যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা গেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি তদন্তাধীন বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশকেও দায়ী করছে। এ বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য কী? জানতে চাইলে ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, কারা ঘটিয়েছে এবং কী কারণে ঘটিয়েছে সেটি তদন্তের বিষয়। আশা করি তদন্তের মাধ্যমে সবকিছু বেরিয়ে আসবে। এ বিষয়ে ডিবির টিমও কাজ করছে।

এর আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহবাগ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ।

মামলার এজাহারে মোহাম্মদ আমানুল্লাহ উল্লেখ করেন, ১৮ সেপ্টেম্বর দিনরাত পৌনে ৮টার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। মোবাইল চুরির অভিযোগ করে তারা ওই যুবককে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিলঘুসি মারেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। পরে তিনি মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর তাকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।

তোফাজ্জলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে।

টিটি/এমকেআর/জেআইএম

Read Entire Article