সারাদেশে ছাত্র-জনতা হত্যা, নিপীড়ন ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদ এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে র্যালি ও সংহতি সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে র্যারি শুরু করেন তারা। এরপর র্যালিটি টিএসসি হয়ে শহীদ মিনার-দোয়েল চত্বর হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষকরা সংহতি সমাবেশ করেন।
এ সময় শিক্ষকরা ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক-গণতন্ত্র মুক্তি পাক’, ‘আমার ছাত্র মরলো কেন-স্বৈরাচার জবাব চাই’, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন-স্বৈরাচার জবাব দে’, ‘শিক্ষকদের এক দাবি-স্বৈরাচার কবে যাবি’, ‘জাস্টিস জাস্টিস-উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সংহতি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আমরা সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে এখানে এক হয়েছি। আমরা কর্মসূচির অংশ হিসেবে র্যালি করেছি। র্যালি নিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতীক সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে এসেছি। আমরা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে তাদের পাশে সবসময়ই আছি।
আরও পড়ুন
- সংলাপের সুযোগ নেই, অসহযোগ সফল করুন: নাহিদ
- শহীদ মিনার জনসমুদ্র
- গণভবনের দরজা খোলা, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসতে চাই: প্রধানমন্ত্রী
সদস্য সচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, বাংলাদেশ চলছে মিথ্যার ওপর। আমরা বলছি মুখে এক কথা, কাজে করছি আরেক রকম। আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে মারা গেছে এটা সারা বাংলাদেশ দেখেছে, সারা বিশ্ব দেখেছে। আর তারা এর জন্য ধরে নিয়ে গেছে ১৬ বছরের এক কিশোরকে। সর্বক্ষেত্রেই দেশ এই ধরনের মিথ্যাচারের ওপর চলছে। আমাদের একটাই দাবি, এই যে দুই শতাধিক মানুষ মারা গেছে সেটার জন্যে দায়ী কারা? যারা দায়ী তাদের কাছে আমরা কোনোভাবেই বিচার চাইতে পারি না। আমরা বিচার চাইতে পারি একটা নিরপেক্ষ সরকারের কাছে। একটা নতুন সরকারের কাছে।
অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন বলেন, জুলাই মাসের ১৫ তারিখ থেকে শুরু করে আজকে পর্যন্ত। নির্বিচারে আমাদের সন্তানদের গুলি করে মারা হচ্ছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি হচ্ছে, সামনা-সামনি গুলি হচ্ছে। সেনাবাহিনীর কাজ হচ্ছে দেশকে প্রতিরক্ষা দেওয়া, বিজিবির কাজ হচ্ছে বর্ডার রক্ষা করা। কিন্তু তারা সবাই এখন আমাদের নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর অস্ত্র হাতে লেলিয়ে পড়েছে। আমরা এর জবাব চাই, কেন এই নিরস্ত্র ছেলেদের ওপর এভাবে হামলা করা হচ্ছে, গুলি করে মারা হচ্ছে। কেন আমরা স্বাধীনভাবে কোথাও যেতে পাচ্ছি না। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ কেন, ছাত্ররা হলে আসতে পাচ্ছে না কেন? এই সবকিছুর বিচার হতে হবে।
এছাড়াও র্যালি ও সংহতি সমাবেশে ঢাবি সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম, আরবী বিভগের চেয়ারম্যান ড. যুবায়ের এহসান, ড. মো. শহীদুল ইসলাম, ড. মিজানুর রহমান, রফিকুল ইসলামসহ সাদা দলের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএ/এমআরএম/এমএস