ঢালাইয়ের পরই ফেটেছে ২ কোটি টাকার সড়ক

3 hours ago 9

কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভা কার্যালয়ের সম্মুখ সড়কটি ঢালাইয়ের দুদিন পরই বহু স্থানে ফেটে গেছে। পৌরসভার রাজস্ব খাত এবং এডিবি বরাদ্দের প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির আরসিসি (রেইনফোর্সড সিমেন্ট কংক্রিট) ঢালাইয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ চলছে। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে পৌরসভা কার্যালয়ে যাতায়াতের জন্য একমাত্র সড়ক এটি। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন সড়কটিতে দেখা গেছে সড়কের বহু স্থানে ফাটল দৃশ্যমান। সেগুলোকে সিমেন্টের আস্তরণ দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

এদিকে ফেটে যাওয়া কোনো সমস্যা নয়—এমন দাবি করে ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গাইলেন পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হাছান। তিনি দাবি করেন সব উপাদান সঠিক পরিমাণে দেওয়া হয়েছে। ফাটলগুলো ‘হেয়ার ক্রেক’।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, এ সড়কের মাধ্যমে চান্দিনা-রামমোহন এবং চান্দিনা-শ্রীমন্তপুর সড়ক দুটির মধ্যেও সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। ফলে সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ। ১৮ ফুট প্রশস্ত এবং ১ হাজার ৪৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ওই সড়কটির উন্নয়ন কাজের জন্য ২০২৪ সালে দরপত্র আহ্বান করে চান্দিনা পৌরসভা। সব প্রক্রিয়া শেষে সুমি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ক অর্ডার পায়।

৫ আগস্টের পরে সড়কটির কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১০ ইঞ্চি পুরুত্বের ঢালাই হওয়ায় বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এবং শনিবার ওই সড়কটির বেশিরভাগ অংশের ঢালাই কাজ করা হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, ঢালাই শেষে পানি লাগিয়ে সড়কের ওপর কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এখনো সড়কের অনেক স্থানে পানি লেগে আছে। তবু অনেক স্থানেই ফাটল দেখা দিয়েছে।

পথচারী আবুল হোসেন বলেন, নতুন রাস্তা। এখনই ফেটে গেছে। এই রাস্তা বেশিদিন টিকবে বলে মনে হয় না।

চান্দিনা বাজারের একজন ব্যবসায়ী বলেন, আমি টাইলসের ব্যবসা করি। এই রাস্তার সঙ্গেই আমার টাইলসের গোডাউন রয়েছে। এখানে অনেক সময় ১০ টনের কাভার্ডভ্যানে টাইলস আসে। এমন ফাটলের কারণে রাস্তাটি টিকবে কি না কে জানে!

ফাটলের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুমি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. সেলিম বলেন, তিন-চার দিনে ফেটে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। ঢালাই যখন পানি টান দেয়, তখন চুলের মতো ফাটল দেখা দেয়। এটা কোনো ব্যাপার নয়। এগুলো সিমেন্টের আস্তরণ দিলেই ঠিক হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে চান্দিনা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হাছান বলেন, সড়কটির উন্নয়নে পৌরসভার রাজস্ব ফান্ড এবং এডিবি থেকে ১ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, ফাটলগুলো শুধু ওপরের অংশে। সিমেন্ট পানির আস্তরণ দিলেই এসব ফাটল ঠিক হয়ে যাবে। সড়কটি ২৫-২৬ বছরেও কিছু হবে না। 

পৌরসভার প্রশাসক ও চান্দিনার ইউএনও নাজিয়া হোসেন বলেন, ‘ফাটল আছে সঠিক। কিছু জায়গায় নতুন করে কাজ করতে হবে। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বিষয়টি মনিটরিং করবেন। বিল দেওয়ার আগে আমরা কাজ আদায় করে নেওয়ার সুযোগ আছে।

Read Entire Article