হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের ছাদ ঢালাইয়ের সময় ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ৬ আগস্ট ছাদ ধসে পড়ার ঘটনা ঘটে।
ছাদ ধসের ঘটনার পর গণপূর্ত বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের টিম এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণেই এমনটি হচ্ছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, গভীর জলাশয়ে মসজিদ নির্মাণের কারণে এমন দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত প্রকৌশলী নৃপেন পাল বলেন, প্রথম দফায় ঢালাইয়ের পর প্রচুর বৃষ্টি হয়। ফলে নিচের মাটি সরে গিয়ে সাইট ধসে পড়ে। ফলে ছাদও ধসে পড়ে যায়। এবার ঢালাইয়ের শেষ পর্যায়ে এসেও হঠাৎ সাটারের খুঁটি স্লিপ করে। এতে পুরো ঢালাই একদিকে গিয়ে পড়ে যায়। শ্রমিকরা লাফিয়ে আত্মরক্ষা করেন।
তিনি আরও বলেন, বারবার সাটারের খুঁটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলো ওয়েল্ডিং করা ছিল। গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারাও বারবার চেক করেছেন।
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা বেগম সাথী বলেন, ঘটনার পরপরই আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। কাজটি করছে গণপূর্ত বিভাগ। এটি টেকনিক্যাল বিষয়। তাদের একটি উচ্চ পর্যায়ের টিম ঘটনাস্থল ঘুরে তদন্ত করছে বলে জেনেছি।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আমার তেমন কিছু করার নেই। যেকোনো পদক্ষেপ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিতে পারেন।
হবিগঞ্জ গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম সাকিবুর রহমানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জানা যায়, সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের অংশ হিসেবে বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের সামনে মডেল মসজিদটির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। কাজটি করছে টিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএসএল অ্যান্ড আলী (জেভি)। নির্মাণ সংস্থা হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ এবং বাস্তবায়ন সংস্থা ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি এটির নির্মাণ করা হচ্ছে। এই মসজিদ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। চুক্তি মূল্য ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। মসজিদটির কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে দুইবার ছাদ ধসে পড়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় মুসল্লীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দেশের অন্যান্য এলাকায় মসজিদের কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। অথচ বানিয়াচংয়ে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঝিমিয়ে চলছে কাজ। এরই মধ্যে দুইবার ছাদ ধসে পড়েছে। ছাদ ধসের ঘটনাটি তদন্তের দাবি জানান তারা। তদন্তের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দাবি জানান এলাকাবাসী।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এমএন/এএসএম