তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে চট্টগ্রামে বিএনপির ‘গণ যাত্রা’

দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন। এ ঐতিহাসিক মুহূর্তকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিভাগজুড়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর মধ্যে শুরু হয়েছে নজিরবিহীন গণ যাত্রা। নগর থেকে উপজেলা সবখানেই নেতাকর্মীদের ঢল, যানবাহনের ব্যস্ততা ও রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক জেলাগুলো থেকে ৭ থেকে ১০ লাখ নেতাকর্মী ঢাকায় সমবেত হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু চট্টগ্রাম জেলা থেকেই লক্ষাধিক নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে হাজারো নেতাকর্মী রাজধানীতে পৌঁছেছেন, বাকিরা গত রাত ও আজ ভোর থেকেই ঢাকামুখী হয়েছেন। তারেক রহমানকে সামনে থেকে দেখতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাচ্ছে লক্ষাধিক নেতাকর্মী : মেয়র বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তারেক রহমান দেশের বাইরে ছিলেন। এ সময় নেতাকর্মীরা তাকে শুধু স্কাইপের মাধ্যমে দেখার সুযোগ পেয়েছেন। তাকে সামনে থেকে দেখার আকাঙ্ক্ষা থাকলেও সবার পক্ষে লন্ডনে গিয়ে দেখা করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, এবা

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে চট্টগ্রামে বিএনপির ‘গণ যাত্রা’
দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন। এ ঐতিহাসিক মুহূর্তকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিভাগজুড়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর মধ্যে শুরু হয়েছে নজিরবিহীন গণ যাত্রা। নগর থেকে উপজেলা সবখানেই নেতাকর্মীদের ঢল, যানবাহনের ব্যস্ততা ও রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক জেলাগুলো থেকে ৭ থেকে ১০ লাখ নেতাকর্মী ঢাকায় সমবেত হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু চট্টগ্রাম জেলা থেকেই লক্ষাধিক নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে হাজারো নেতাকর্মী রাজধানীতে পৌঁছেছেন, বাকিরা গত রাত ও আজ ভোর থেকেই ঢাকামুখী হয়েছেন। তারেক রহমানকে সামনে থেকে দেখতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাচ্ছে লক্ষাধিক নেতাকর্মী : মেয়র বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তারেক রহমান দেশের বাইরে ছিলেন। এ সময় নেতাকর্মীরা তাকে শুধু স্কাইপের মাধ্যমে দেখার সুযোগ পেয়েছেন। তাকে সামনে থেকে দেখার আকাঙ্ক্ষা থাকলেও সবার পক্ষে লন্ডনে গিয়ে দেখা করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, এবার নেতাকর্মীরা সরাসরি তাকে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। শুধু চট্টগ্রাম থেকেই এক লাখের বেশি নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছেন। এ উপলক্ষে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। বাস, ট্রেন, হাইস— যে যেভাবে পারছে, ঢাকার পথে রওনা দিচ্ছে। ডা. শাহাদাত হোসেন আরও বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী একটি বিশাল বহর গড়ে উঠবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। নগর থেকে অন্তত ১৫ হাজার, দুই বিশেষ ট্রেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মুখপাত্র শওকত আজম খাজা বলেন, চট্টগ্রাম নগর থেকে কমপক্ষে ১৫ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছেন। অনেকে আগেই পৌঁছেছেন, বাকিরা গত রাত ও আজ ভোরে রওনা হয়েছেন। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম থেকে নগর বিএনপির নেতাকর্মীরা তিনটি আন্তঃনগর ট্রেনে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। ট্রেনগুলো হলো সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, তুর্ণা নিশিতা এক্সপ্রেস, সুবর্ণা এক্সপ্রেস। দুটি বিশেষ ট্রেনের সম্পূর্ণ টিকিট এবং আরেকটি ট্রেনের অর্ধেক টিকিট নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য আন্তঃনগর ট্রেন থেকেও টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ১০০টি বাস, দেড়শ মাইক্রো ও হায়েস ভাড়া করা হয়েছে। এ ছাড়া নগরের ৪১টি ওয়ার্ড থেকে নিজ উদ্যোগে আরও প্রায় ১০০টি বাস ও শতাধিক মাইক্রো-হাইয়েস ঢাকায় যাচ্ছে। যুবদল-ছাত্রদলের প্রস্তুতি চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দ্বিপ্তী বলেন, ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনে তারেক রহমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আপোষহীন নেতৃত্ব দিয়েছেন। চব্বিশের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের সময় ভার্চুয়ালি নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি আজও নেতাকর্মীদের অনুপ্রাণিত করে। তিনি দাবি করেন, তারেক রহমানের সংবর্ধনাকে ঘিরে চট্টগ্রাম থেকে লক্ষাধিক নেতাকর্মী ঢাকায় সমবেত হবেন। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরীফুল ইসলাম বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আগামীর রাজনীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা পাবে। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক ছাত্রনেতা ঢাকায় যাবেন। তিনি জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩-৪টি করে বাস এবং ২-৩টি করে মাইক্রোবাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চবি-চমেক ছাত্রদলের ৫ শতাধিক নেতাকর্মী ঢাকায় চমেক শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হাসিবুল হাবিব বলেন, ছাত্রদলের ৫০ জন নেতাকর্মী নিয়ে একটি বাসে তারা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এদিকে, তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছেন। এর মধ্যে অনেকে ইতোমধ্যে রাজধানীতে পৌঁছেছেন। বাকিরা রাতে ট্রেন ও বাসে ঢাকামুখী হবেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী ঢাকায় উপস্থিত থাকবেন। গত পরশু দিন থেকেই তারা ঢাকায় যাওয়া শুরু করেছেন। দক্ষিণ জেলা থেকে ২০ হাজার, ২৭০ বাস ভাড়া চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণ জেলা থেকে অন্তত ২০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২৭০টির বেশি বাস প্রায় ৫০০টি হাইয়েস ভাড়া করা হয়েছে। কেউ কেউ ট্রাক, পিকআপে, আবার অনেকে স্ব-উদ্যোগে ব্যক্তিগত যানবাহনে ঢাকায় যাচ্ছেন। উত্তর জেলা থেকে ৩৫ হাজার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, উত্তর জেলার ৭টি উপজেলা থেকে প্রতিটি উপজেলা থেকে গড়ে ৫ হাজার করে অন্তত ৩৫ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছেন তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে। মনোনয়নপ্রাপ্ত ও প্রত্যাশীদের আলাদা বহর সরেজমিনে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম-৯ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী আবুল হাশেম বক্কর বিকেল নাগাদ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও স্লোগানে মুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক মুখপাত্র ইদ্রিস আলী বলেন, চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মনোনয়নপ্রাপ্ত ও মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি নেতারা নিজ নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের নিয়ে আলাদা বহরে ঢাকামুখী হয়েছেন। এক এক প্রার্থীর সঙ্গে ৭-১০০০ করে নেতাকর্মীরা ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। এতে দলীয় রাজনীতিতে শক্তি প্রদর্শনের প্রতিযোগিতামূলক চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দলীয় নেতাদের মতে, তারেক রহমানের এ প্রত্যাবর্তন শুধু ব্যক্তি বা দলীয় ঘটনা নয়, এটি বিএনপির ভবিষ্যৎ আন্দোলন, নেতৃত্ব ও নির্বাচনী রাজনীতির জন্য একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। সে কারণেই চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে এ বিপুল জনস্রোত। নগর যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি শাহেদ আকবর বলেন, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে বিএনপির যে গণ যাত্রা, তা সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক সমাবেশে রূপ নিচ্ছে। তার মতে, রাজধানীতে এই উপস্থিতির মধ্য দিয়ে বিএনপির সংগঠনিক শক্তি ও রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হবে। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. আবু বকর কালবেলাকে বলেন, ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের সংবর্ধনা উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকে একটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। পাশাপাশি তুর্ণা নিশিতা ও ওয়ান-আপ ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow