তিতাস ও বাখরাবাদ ফিল্ডে দুটি গভীর অনুসন্ধান কূপ খননের লক্ষ্যে চীনা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)। চীনা প্রতিষ্ঠান সিএনপিসি চুয়ানছিং ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিডিসি) সঙ্গে এ চুক্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) বোর্ড রুমে এই চুক্তি সই হয়।
বিজিএফসিএলের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন কোম্পানি সচিব মো. মোজাহার আলী, সিসিডিসির পক্ষে সই করেন কোম্পানির সিইও লি জিয়াওমিং।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে সিসিডিসির প্রতিনিধি, পেট্রোবাংলার পরিচালক, প্রকল্প পরিচালক, বিজিএফসিএল ও বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বিরাজমান জ্বালানি ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে ভূ-গর্ভস্থ গভীরতম স্তর থেকে গ্যাস অনুসন্ধানের লক্ষ্যে বিজিএফসিএলের আওতায় ২টি গভীর অনুসন্ধান কূপ, তিতাস-৩১ ডিপ (৫৬০০ মিটার) এবং বাখরাবাদ-১১ ডিপ (৪৩০০মিটার)- এর খনন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
- আরও পড়ুন
ফ্লাইট রেস্ট্রিকশন জোনে ৫২৫ উঁচু ভবন, চিঠি দিলেও ভাঙেনি রাজউক
আসমার তৈরি পাটের ব্যাগ যাচ্ছে ওমানে
কূপ খনন, ভূমি অধিগ্রহণ ও গ্যাস গ্যাদারিং পাইপলাইন নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি ঋণ ৫৫৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং বিজিএফসিএলের নিজস্ব অর্থায়ন ২৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদকাল ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
তিতাস ও বাখরাবাদ ফিল্ডে ২০১১-১২ সালে বাপেক্স পরিচালিত তিনডি সাইসমিক জরিপের ডাটা ২০১৯-২০ সালে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশন দ্বারা পুনঃমূল্যায়নের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে এই প্রকল্প নেওয়া হয়। জিওলজিক্যাল এবং জিওফিজিক্যাল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা জিওটেকনিক্যাল অর্ডার (জিটিও) অনুযায়ী তিতাস ফিল্ডের অনাবিষ্কৃত ওভারপ্রেশার জোনের নিচে ভুবন ও বড়াইল ফরমেশনের ৪টি স্তরকে এবং বাখরাবাদ ফিল্ডের অনাবিষ্কৃত ওভারপ্রেশার জোনের নিচে ভুবন ও বড়াইল ফরমেশনের ২টি স্তরকে টার্গেট করে ড্রিলিং করা হবে। গভীর কূপ দুইটি খননের মাধ্যমে তিতাস ও বাখরাবাদ ফিল্ডের ৩৭০০ থেকে ৫৬০০ মিটার ভূ-অভ্যন্তরে গ্যাসের উপস্থিতি, বিস্তৃতি ও গ্যাস রিজার্ভ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত চীনা প্রতিষ্ঠান সিএনপিসি চুয়ানছিং ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড ৫৯৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কূপ দুটি খনন করবে।
পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, কূপ দুটির আবদ্ধ গ্যাস স্তরের চাপ প্রায় ১৫ হাজার পিএসআই এবং তাপমাত্রা প্রায় ৩৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট, যা বাংলাদেশে প্রথম উচ্চ চাপ ও উচ্চ তাপমাত্রার কূপ হবে। এই উচ্চচাপ ও উচ্চ তাপমাত্রায় কূপ দুটি (তিতাস-৩১ ডিপ এবং বাখরাবাদ-১১ ডিপ) সফলভাবে খনন সম্পন্ন হলে দেশের গ্যাস সেক্টরে এক নতুর দিগন্ত উন্মোচিত হবে এবং বর্তমানের গ্যাস রিজার্ভ বৃদ্ধি পাবে।
কূপ দুইটি খনন শেষে তিতাস-৩১ ডিপ কূপ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। এছাড়া বাখরাবাদ-১১ ডিপ কূপ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার আশা করছে পেট্রোবাংলা।
এনএস/কেএসআর/জেআইএম