তিন বিবস্ত্র নারীর ভাইরাল ছবি কি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের?

3 hours ago 7
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নারী নির্যাতনের ছবি দাবিতে সম্প্রতি ফেসবুকে তিনজন বিবস্ত্র নারীর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে ছবিটি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, এই তিন নারী বিবস্ত্র অবস্থায় পাকিস্তানি ক্যাম্প থেকে পালাচ্ছিলেন। তবে এটি বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়কালের ছবি নয় বলে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টওয়াচ। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে টিম জানায়, এই ছবি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নয়। এটি ১৯৪২ সালে জার্মানির একটি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে তোলা হয়েছিল। ফেসবুকে প্রচারিত ছবির সাহায্যে অনুসন্ধান করে স্টক ছবির ওয়েবসাইট গেটি ইমেজে এটি পাওয়া যায়। সেখানে ছবির বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, এটি ১৯৫৫ সালে ইতালিয়ান ম্যাগাজিন লাভোরোতে (Lavoro) প্রকাশিত হয়েছিল। ছবিটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পগুলোতে (Nazi concentration camps) চালানো নির্যাতনের চিত্র ফুটিয়ে তোলে। ম্যাগাজিনে ‘লেস্ট উই ফরগেট (Lest we forget)’ শিরোনামে ছবিটি প্রকাশ করেছিলেন আন্দো গিলার্ডি নামে একজন ফটোগ্রাফার ও সাংবাদিক। পুনরায় অনুসন্ধানে, ফোটোটেকা-গিলার্দি নামে ঐতিহাসিক ছবি ও চিত্রের আর্কাইভে ছবিটি সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যায়। বলা হয়, এটি ১৯৪২ সালে জার্মানির একটি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে তোলা। ছবিটিতে থাকা বিবস্ত্র নারীরা ইউক্রেনের নাগরিক এবং ধর্ম বিশ্বাসে ইহুদি ছিলেন। উপরোক্ত তথ্যের ভিত্তিতে এটি স্পষ্ট, ছবিটির সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কোনো সম্পর্ক নেই। ছবিটি মূলত ১৯৪২ সালে জার্মানির একটি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে তোলা। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইউটিউবার ইলিয়াস হোসেনের লাইভ টকশোতে গত ৫ জানুয়ারি কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার খুনের ঘটনায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেজর শরিফুল হক ডালিম নামে পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি। এ সময় ইলিয়াস হোসেন মুক্তিযুদ্ধে দুই লাখ নারীর সম্ভ্রমহানির বিষয়টি জানতে চাইলে কথিত মেজর ডালিম বলেন, ‘আমি মাত্র দুজন নারীকে চিনি, যাদের সম্ভ্রমহানি হয়েছে।’ তার এই মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এসব আলোচনা-সমালোচনায় উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধের সময় নারী নির্যাতনের প্রকৃত সংখ্যাও। সরকারি হিসেবে যেটি দুই থেকে চার লাখ। এরই প্রেক্ষিতে বিবস্ত্র অবস্থায় দৌড়ানো ওই তিন নারীর ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ছবি। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দাবিটি মিথ্যা বলে প্রতীয়মান হয়।
Read Entire Article