জেফ ডুজন, ম্যালকম মার্শাল ও ভিভ রিচার্ডস- ক্রিকেট বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টিকারী ত্রয়ী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সোনালী প্রজন্মের তিন তারকা। ভিভ রিচার্ডস ছিলেন তখন ক্যারিবীয়দের অধিনায়ক। ম্যালকম মার্শালের সামনে পড়লে অনেক ব্যাটারের হাঁটু কাঁপাকাঁপি শুরু হতো। আর উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে যে কোনো অধিনায়কের আস্থার প্রতীক ছিলেন জেফ ডুজন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের তিন মহারথী— বিদায় নিলেন একইসঙ্গে, ১৯৯১ সালে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজকের দিনে শেষ ম্যাচ খেলেন জেফ ডুজন, ম্যালকম মার্শাল এবং ভিভ রিচার্ডস; কিন্তু টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা জয় দিয়ে রাঙাতে পারেননি তারা। ওভালে ইংল্যান্ডের কাছে ৫ উইকেটে হারতে হয়েছিল। এই ম্যাচ জিতে ৫ ম্যাচের সিরিজ ইংল্যান্ড ২-২ সমতায় শেষ করেছিল।
জেফ ডুজন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বকালের সেরা উইকেটরক্ষক, ২৭২টি ডিসমিসালের রেকর্ড নিয়ে তার ক্যারিয়ার শেষ করেন। ম্যালকম মার্শাল, যিনি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা পেসার, ৩৭৬ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ২০.৯৪ গড়ে।
অপরদিকে ব্যাটিং কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডস তার শেষ টেস্টে ৬০ রানের ইনিংস খেলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ব্যাটিং গড় ৫০-এর উপরে রাখেন। ৫০.২৩ গড়ে ১২১ টেস্টে তিনি করেন ৮৫৪০ রান।
একই ইনিংসে চ্যাপেল ভাইদের ঐতিহাসিক সেঞ্চুরি
ক্রিকেট ইতিহাসে একই দলের হয়ে দুই ভাইয়ের একসঙ্গে খেলার অনেক রেকর্ড আছে। কিন্তু একই টেস্টের একই ইনিংসে দুই ভাইয়েরই সেঞ্চুরি করার রেকর্ড সম্ভবত একটিই। সেটা অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল এবং তার ভাই গ্রেগ চ্যাপেলের। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ভ্রাতৃদ্বয় হিসেবে একই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন তারা।
১৯৭২ সালে দ্য ওভালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম টেস্টে এই কীর্তির জন্ম দেন অস্ট্রেলিয়ার এই বিখ্যাত দুই ভাই। ইংল্যান্ডের ২৮৪ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে গ্রায়েম ওয়াটসন ১৩ ও কেইথ স্ট্যাকপোল ১৮ রানে আউট হলে হাল ধরেন দুই ভাই ইয়ান চ্যাপেল ও গ্রেগ চ্যাপেল।
২০১ রানের জুটি গড়েন তারা দু’জন। অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল করেন ১১৮ রান এবং তার ভাই গ্রেগ চ্যাপেল করেন ১১৩ রান। রস এডওয়ার্ড ৭৯ রান করলে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৯৯ রান।
দুই ভাইয়ের সেঞ্চুরির সুবাদে অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে। যদিও অ্যাশেজ সিরিজের ভাগ্য আগেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। ফলে এ জয়ের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া সিরিজটি ২-২ সমতায় শেষ করতে পেরেছে। শুধু তাই নয়, ১৯৭০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়া তাদের আধিপত্যের ইঙ্গিত দেয় এই ম্যাচ দিয়ে।
১৯৪০: এডি বার্লোর জন্মদিন
দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সফল অলরাউন্ডার এডি বার্লোর জন্মদিন ছিল আজ। টেস্ট ক্রিকেটে ৪৫.৭৪ গড়ে সাতটি সেঞ্চুরিসহ তিনি দুর্দান্ত ব্যাটিংশৈলি দেখিয়েছেন। ৪৫.৭৪ গড়ে করেন ২৫১৬ রান। সে সঙ্গে তার মিডিয়াম পেস বোলিংও ছিল দারুণ কার্যকরি। ৩০ টেস্টে ৪০টি উইকেট শিকার করেন বার্লো। সবই চশমা পরে খেলে।
১৯৭০ সালে হেডিংলিতে অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশের হয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে তিনি পাঁচ বলে চার উইকেট নেন, যার মধ্যে ছিল একটি হ্যাটট্রিক।
ব্যারি রিচার্ডসের সঙ্গে তার ওপেনিং জুটি ছিল দুর্দান্ত। তবে ১৯৬৯-৭০ সালের পর দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ক্রিকেট থেকে বাদ পড়ার কারণে খুব অল্প সময়েই থেমে যান তিনি।
২০১৮: ক্রিস ওকসের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ও ভারতের লজ্জাজনক পরাজয়
২০১৮ সালের এই দিনে লর্ডস টেস্টে দেড় দিন বৃষ্টির কারণে খেলা ব্যাহত হলেও চতুর্থ দিনে ইংল্যান্ডের কাছে এক ইনিংস ও ১৫৯ রানের বিশাল ব্যবধানে লজ্জাজনক পরাজয়ে হয়েছে ভারতের।
ভারতীয়রা প্রথম ইনিংসে ১০৭ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩০ রানে অলআউট হয়ে যায়। ইংল্যান্ডের পেসার জেমস অ্যান্ডারসন ম্যাচে ৯টি উইকেট নিলেও ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার জিতেছেন বেন স্টোকসের বদলি খেলোয়াড় ক্রিস ওকস।
পেসার ওকস এই ম্যাচে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান। তার অপরাজিত ১৩৭ রানের ইনিংসের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন।ওকসের এই অসাধারণ পারফরম্যান্স তার নাম লর্ডসের সম্মান বোর্ডে পাঁচ উইকেট, দশ উইকেট এবং সেঞ্চুরির জন্য উঠিয়েছে। ভারতের এই পরাজয় সিরিজে তাদের জন্য ছিল একটি বড় ধাক্কা।
আইএইচএস/