ছাত্রদল নেতাকে অপহরণের পর নির্যাতন করে হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির মামলায় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকার মেয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, গত ২৫ আগস্ট রাজবাড়ীর বিজ্ঞ বালিয়াকান্দি আমলি আদালতে সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, তার ছেলে আশিক মাহমুদ মিতুল হাকিম ও আবুল কালাম আজাদসহ ১৩ জনের নামে মামলা করা হয়। এ ছাড়া এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়। মামলাটি করেন জিয়া স্মৃতি পাঠাগার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বালিয়াকান্দি উপজেলার বিলধামু গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে তুহিনুর রহমান।
মামলায় তাকে অপহরণের পর নির্যাতন করে হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি আদালতের বিচারক মৌসুমী সাহা আমলে নিয়ে বালিয়াকান্দি থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি তুহিনকে তৎকালীন রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি ও সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের নির্দেশে মামলার অন্য আসামিরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে অপহরণ করে। পরে নায়েব আলীর বাড়ির একটি নির্জন কক্ষে নিয়ে বালিয়াকান্দি থানার সাবেক ওসি আবু সামা মো. ইকবাল হায়াতসহ অন্যদের সহায়তায় তুহিনের পা উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্যাতন চালিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মেরে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে ফেলার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। পরে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিলে তাকে পেন্ডিং মামলায় চালান দেওয়া হয়।
এরপর তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে ভারতের চেন্নাইয়ে অ্যাপোলো হাসপাতাল ও ভেলরে সিএনসি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তায় তিনি রাজধানীর ইবনেসিনা হাসপাতালে মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচার করে সি-৪ ও সি-৬ কৃত্রিম ডিক্স স্থাপন করলেও এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারেননি। উল্লিখিতদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করতে চাইলে তাকে ক্রস ফায়ারের হুমকি দিয়ে দমিয়ে রাখা হয়। ক্রসফায়ারের ভয়ে তিনি এতদিন পরিবার নিয়ে রাজবাড়ী জেলার বাইরে বসবাস করছিলেন। দেশের পরিবেশ ভালো হওয়ায় তিনি এ মামলাটি করেন।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি মো. জামাল উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, তুহিনুর রহমানের করা মামলায় ৭নং আসামি আবুল কালাম আজাদ। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকার মেয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (২৩ নভেম্বর) তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।