গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তার পানি ও ফুলছড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমেছে। অন্যদিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীর পানি এবং শহরের পাশে ঘাঘট নদের পানি বাড়ছে। তবে তিস্তায় এখনও বিপৎসীমার তিন সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
শুক্রবার (২১ জুন) বিকেল ৩টা থেকে শনিবার (২২ জুন) বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করায় নদীতীরবর্তী সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার চরের নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে ৫২ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার তিন সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে সাত সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্য দিকে করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৪৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে এবং ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে পাঁচ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১২৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি কমে যাওয়ায় চরাঞ্চলের নিচু এলাকার আবাদি জমি ও রাস্তাঘাট জাগতে শুরু করেছে। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদ তীরবর্তী এলাকা সদরের মোল্লারচর, সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাশিয়া, চন্ডিপুর, তারাপুর ইউনিয়ন ও ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে করতোয়া ও ঘাঘটের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। তবে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমেছে। আমরা সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান বলেন, জেলা ও উপজেলায় দুর্যোগকালীন সভা করে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিক সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সদরে নদীবেষ্টিত যে চারটি ইউনিয়ন রয়েছে, সেসব গ্রামগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এসব এলাকায় শুকনা খাবার বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল জাগো নিউজকে বলেন, সম্ভাব্য দুর্যোগপ্রবণ চারটি উপজেলার প্রতিটি উপজেলায় ৫০ ব্যাগ শুকনা খাবার, নগদ অর্থ ১৫ লাখ টাকা, শিশু খাদ্য বাবদ দুই লাখ টাকা এবং গো-খাদ্যের জন্য পাঁচ লাখ টাকা করে উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য চারটি রেসকিউ বোট ও ৩৮৪ টন চাল মজুত ও স্থায়ী-অস্থায়ী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৫০০ টন চাল, ১০ লাখ টাকা (নগদ), পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, এক হাজার বান্ডিল ঢেউটিন, গৃহনির্মাণ বাবদ ৩০ লাখ টাকা, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ১০ লাখ টাকা বরাদ্দের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
এনআইবি/এএসএম