তীব্র গরমে লম্বা লাইনে ভোগান্তি শিক্ষার্থীদের

3 months ago 28

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও চারুকলা ইউনিট মিলে মোট পাঁচ হাজার ৯৬৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তবে সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সময় দেওয়া হয়েছে মাত্র তিন দিন। এর ফলে কষ্ট হলেও তাড়াহুড়ো করেই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ভিড় জমিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। তীব্র গরমে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নোটিশে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আগামী ১০ থেকে ১২ জুনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগে হাজির হয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

তবে তীব্র গরম এবং ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার দুশ্চিন্তা নিয়ে অনেকে আগে ভাগেই ভর্তি হতে এসেছেন। তীব্র গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে হাঁসফাস অবস্থা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা অনলাইনে প্রদান করা হলেও ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে টাকার জমার রশিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীেদর অগ্রণী ব্যাংক ও কলা, আইন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদসহ অন্যন্য অনুষদের সোনালী ব্যাংক থেকে সত্যায়িত করতে হয়। সত্যায়িত রশিদ বিভাগে প্রদান করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। তবে অগ্রণী ও সোনালী ব্যাংকের যে কোনো শাখায় এই কাজটি করা যায় না। দুই ব্যংকেরই কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্পোরেট শাখাতেই এই কাজ করতে হয়। যার ফলে সারাদেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

মঙ্গলবার (১১ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জনতা ব্যাংকের টিএসসি শাখার গেট থেকে শুরু করে লম্বা লাইন শুরু হয়েছে। এই লাইন টিএসসির মূলগেট হয়ে টিএসসির শেষ মাথা দিয়ে কারাস বিল্ডিং পার হয়ে, টিএসসি মেট্রোরেল স্টেশনও অতিক্রম করে পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনে পর্যন্ত পৌঁছেছে। লাইনে শুধু শিক্ষার্থী নয় দাঁড়িয়েছেন অভিভাবকরাও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় এমন ভোগান্তি মানতে পারছেন না নতুন শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা। রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল, সহ অন্যন্য হলেও লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

ঢাবিতে ভর্তি, তীব্র গরমে লম্বা লাইনে ভোগান্তি শিক্ষার্থীদের

সোমবারও (১০জুন) এমন লাইন দেখা যায় প্রশাসনিক ভবনের সোনালী ব্যাংক ঘিরে। সেই লাইন সোনালী ব্যাংক থেকে শুরু হয়ে পৌঁছে যায় শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সামনে পর্যন্ত।

মালিহা তাবাসসুম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমাদের ভালো লাগার জায়গাটা অন্যরকম। কিন্তু ভর্তির প্রথম দিনেই এমন ভোগান্তি আমাদের ধারণাগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সব থেকে বড় এবং সমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু তার ভর্তি প্রক্রিয়া এমনটা হবে এটা কখনো আশা করিনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এদিকে নজর দেওয়া উচিত।

ঢাবিতে ভর্তি, তীব্র গরমে লম্বা লাইনে ভোগান্তি শিক্ষার্থীদের

আব্দুল কুদ্দুস নামে একজন অভিভাবক বলেন, বাংলাদেশের সব কিছু এখন অনলাইন নির্ভর। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেখানে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাচ্ছেন। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখনো সেই উদাহরণ তৈরি করতে পারেনি, এটা আসলেই দুঃখজনক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের মানুষকে পথ দেখায়। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো স্মার্ট কার্যক্রম শুরু হয়নি। যার ফলে আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তারা চাইলে দেশের যেকোনো প্রান্তে তাদের ব্যাংক শাখাগুলোতে তারা টাকাটা নিতে পারতো। অথবা ঈদের পরে ভর্তি কার্যক্রমটা শুরু করতে পারতো। আমি রংপুর থেকে এসেছি, কিন্তু ঈদের এ সময়ে মেয়েকে নিয়ে ঠিকমতো ফিরতে পারবো কি না সেটা জানা নেই।

এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে কল দেওয়া হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এমএইচএ/এসএনআর/জেআইএম

Read Entire Article