সিলেটে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। নগরীর বিভিন্ন মন্দিরে নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে মহালয়া। মহালয়া উপলক্ষে গত চার দিনব্যাপী সিলেটের মিরাবাজার বলরাম আখড়ায় মহালয়া উদযাপন পরিষদ শ্রীহট্টের আয়োজনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ধর্মীয় সঙ্গীত ও গীতা পাঠের ওপর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া দুঃস্থদের মাঝে সেলাই মেশিন ও বস্ত্র বিতরণ এবং রক্ত দান করা হয়েছে। পরে সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্মৃতি বৃত্তি বিতরণ করা হয়। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এর আগে মহালয়া উপলক্ষে বিভিন্ন মন্দিরে ছিল চণ্ডীপাঠ, ধর্মীয় গান আর মহিষাসুর বধের পরিবেশনা হয়। মহালয়া দেখতে আসা ভক্তরা কালবেলাকে জানান, শিউলি ফুলের সুবাস, ভোরের কুয়াশা আর সুর সবকিছু মিলিয়ে মহালয়া যেন এক বিশেষ অনুভূতি।
প্রবীণরা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ছোটবেলায় মহালয়া মানেই ছিল ভোরে সবাই মিলে রেডিওর সামনে বসে ‘মহিষাসুর মর্দিনী’ শোনা। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর রোববার মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হবে পূজার মূল পর্ব। এর আগের দিন শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মহাপঞ্চমীতে দেবীপক্ষের আবহে মণ্ডপে মণ্ডপে বাজবে ঢাক-ঢোল।
সিলেটে এবার ৬১৮টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হবে। ইতোমধ্যে সিলেট নগর ও জেলার পূজামণ্ডপগুলোতে প্রতিমা নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন মন্দিরে দেখা গেছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে অধিকাংশ মণ্ডপে শেষ হয়েছে প্রতিমা নির্মাণকাজ। শিল্পীদেরও এখন রঙ-তুলির আঁচড়ে সাজ-সজ্জা ও প্রতিমার সৌন্দর্য বর্ধণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সিলেটের বাইরে বিভিন্ন উপজেলাও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সার্বজনীন দূর্গোৎসবের মণ্ডপসমূহে দেখা গেছে সাজ সাজ রব।
জেলার বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে জানা গেছে, বরাবরের মতো এছরও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উদযাপন করা হবে শারদীয় দূর্গোৎসব। কাদামাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে মূর্তি নির্মাণের পরে সুনিপুণ হাতে রঙ-তুলির ছোঁয়ায় দেবীর প্রতিমাকে রাঙিয়ে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা।
মৃৎশিল্পীরা কালবেলাকে বলেন, প্রতিবছরই তারা অধীর আগ্রহে দেবী দূর্গার প্রতিমা তৈরির কাজের অপেক্ষায় থাকেন। শুধু জীবিকার জন্যই নয় বরং দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির সঙ্গে এসব শিল্পীদের ধর্মীয় অনুভূতি, ভক্তি আর ভালোবাসা জড়িয়ে আছে।
সিলেট নগরীর দাড়িয়া পাড়ার প্রতিমাশিল্পী বল্লব রায় কালবেলাকে বলেন, দীর্ঘ এক মাসের অধিক সময় ধরে দুর্গা মায়ের প্রতিমার কাজ করছি। মূর্তি বানানোর কাজ শেষ পর্যায়ে।
এদিকে, সিলেটে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজা আয়োজন কমিটির নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম কালবেলাকে বলেন, পূজা উৎসব নির্বিঘ্ন করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। ঝুকিপূর্ণ বলে কিছু নেই, আমরা সবখানেই গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে, উপজেলাগুলোতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
র্যাব-৯ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সিলেট জেলা ও মহানগরে মোট ৬১৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সিলেট মহানগরে সার্বজনীন ১৪২টি ও পারিবারিক ২০টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সিলেট জেলায় সার্বজনীন ৪২৭টি ও পারিবারিক ২৯টি পূজা হবে।
সিলেট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পূজা অনুষ্ঠিত হবে জকিগঞ্জে। এ উপজেলায় ৮৪টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় সর্বাধিক ৪১টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া এয়ারপোর্ট থানায় ৪১টি, শাহপরাণ থানায় ২৫টি, মোগলাবাজারে ২০টি, জালালাবাদে ২০টি এবং দক্ষিণ সুরমায় ১৫টি পূজা হবে।
এ ছাড়া সুনামগঞ্জ জেলায় ৪২৪টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবার সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫১টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব হবে। এরমধ্যে উপজেলায় ২৩টি সার্বজনীন ও ২টি ব্যক্তিগত এবং পৌরসভায় ২৫টি সার্বজনীন ও ১টি ব্যক্তিগত পূজামণ্ডপ রয়েছে। ছাতক উপজেলায় ৩০টি, জগন্নাথপুর উপজেলায় ৩৯টি, দিরাই উপজেলায় ৭০টি, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ২১টি, জামালগঞ্জ উপজেলায় ৫১টি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ২৯টি, শাল্লা উপজেলায় ৩২টি, তাহিরপুর উপজেলায় ২৯টি, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ১৯টি, ধর্মপাশায় উপজেলায় ২১টি, মধ্যনগর উপজেলায় ৩২টি মণ্ডপে শারদীয় দুগোর্ৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ কালবেলাকে বলেন, পূজাকে ঘিরে পুলিশ বিভিন্ন নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরি করেছে। সাদা পোশাকে থাকবে একটি টিম, আবার মোবাইল টিমও থাকবে। আমরা আশা করি সকলের সহযোগিতায় এ উৎসব আমরা শেষ করব।
হবিগঞ্জ জেলায় ৬৫৯টি এবং মৌলভীবাজার জেলায় সর্বোচ্চ ৯৯৩টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এবার দেবীর আগমন ঘটছে গজে (হাতি) আর গমন হবে দোলায় (পালকি)। শাস্ত্রমতে দেবীর আগমন গজে হলে সমৃদ্ধি আসে, আর গমন দোলায় হলে রোগ-শোক বাড়ে।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মহাপঞ্চমী, রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) মহাষষ্ঠী, সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মহাসপ্তমী, মঙ্গললবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মহাঅষ্টমী, বুধবার (১ অক্টোবর) মহানবমী এবং বৃহস্পতিবার( ২ অক্টোবর) বিজয়া দশমী পালিত হবে।
এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তায় বেশ কড়া নিরাপত্তা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সিলেট জেলা ও মহানগের পুলিশের পাশাপাশি, সাদা পোশাকে মাঠে থাকবেন তারা।
এ ছাড়া প্রতিটি পূজা মণ্ডপকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হবে এবং প্রতি পাড়া মহল্লায় নিয়মিত ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি করা হবে। সেই সঙ্গে যেকোনো প্রয়োজনে পুলিশের সকল হট লাইন নম্বরগুলো সক্রিয় থাকবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্যোশাল মিডিয়া ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ প্লাটফর্মে একটি গ্রুপও খোলা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মলয় পুরকায়স্থ কালবেলাকে বলেন, ১০ দিন আগে থেকে মূর্তি তৈরির স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সিলেটে আমরা কোনো জায়গাতেই ঝুঁকি দেখছি না। এ বছরও নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে প্রশাসন থেকে সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ভলান্টিয়ারদের নাম, ছবিসহ তালিকা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছি। মণ্ডপে নারী-পুরুষ প্রবেশের ক্ষেত্রে পৃথক লাইন থাকবে। নারীর লাইনে নারী ভলান্টিয়ার পাহারায় থাকবে। সন্দেজজনক কিছু পেলে দায়িত্বরত পুলিশকে জানাবে অথবা ৯৯৯ এ কল করে জানানো হবে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর ও মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে যেসব স্থানে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে সেসব স্থানে পুলিশ টহলে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মহাষষ্ঠীর দিন সকাল থেকে সব মণ্ডপ পুলিশ পাহারায় থাকবে। কয়েকটি মণ্ডপে আমাদের মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে থাকবে পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্সও থাকবে। সাদা পোশাকের গোয়েন্দা নজরদারি ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে পূজা চলাকালীন রাস্তায় যাতে জ্যাম তৈরি না হয় সেজন্য পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হবে। সিসিটিভির আওতায় মণ্ডপ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখান জন্য ইতোমধ্যে হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।
র্যাব-৯ এর সিও উইং কমান্ডার তাজমিনুর রহমান চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত যে প্লানিং করেছি, অতি ঝুঁকিপূর্ণ যে তালিকা আছে সেসব জায়গায় হাই মোবাইল ইউনিট স্থাপন করা হবে যারা পেট্রোলিংয়ে থাকবে। সেটা গোয়েন্দা বিভাগ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখব। এর বাইরেও আমরা একটা ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টার স্থাপন করবো।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় সেটা স্থাপনের পরিকল্পনা আছে। লোকবলের সংকট মাথায় রেখে আমরা সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা সাজাচ্ছি। সোমবার থেকে আমরা মন্দির ও মণ্ডপের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে সব জানার চেষ্টা করেছি। কারো দ্বারা দুর্বৃত্তায়নের শঙ্কা করছেন কি না সেটা জানার চেষ্টা করেছি।
তাজমিনুর রহমান চৌধুরী বলেন, এছাড়া যেসব জায়গায় লোকসমাগম হবে সেখানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কেমন তা মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া মোবাইল ইউনিটের মাধ্যমে আমাদের গাড়িতে করে বাহিনীর ড্রেসেই টহল পরিচালিত হবে। এছাড়া সাদা পোষাকে আমাদের গোয়েন্দা টিম সর্বদা মনিটরিং করবে। কোথাও যদি কোনো নাশকতা বা পূজা মণ্ডপভিত্তিক কোনো অনৈতিক কার্যক্রম হয় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মুত্যুঞ্জয় ধর ভোলা কালবেলাকে বলেন, সিলেটে সনাতন যুব ফোরাম, চৈতালী, ঝুমকা সংঘ দাড়িয়াপাড়া, জল্লাড়পাড়, বিলপাড়, দুর্গাবাড়ি স্থায়ী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন এবং শিববাড়িতে পাঁচটি বড় বড় মণ্ডপ হয়। এবার যেহেতু সিলেটে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে তাই আমরা ধারণা করছি, শিববাড়ি এলাকায় প্রচুর লোকসমাগম হবে। এ বছর প্রথম কুমারী পূজা দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি মহালক্ষ্মী দিবাপীঠে অষ্টমীর দিন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, এখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হবে। এখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত পুলিশ, আনসারসহ অন্যান্য নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে আমরা প্রশাসনকে বলেছি। পূজা যেহেতু ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু তাই এখনো কতজন নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হবে তা এখনও চূড়ান্ত হিসাব পাইনি। তবে যেসব স্থানে মূর্তি তৈরি করা হচ্ছে সেসব স্থানে পুলিশি নিরাপত্তা ইতোমধ্যে আছে। চার স্তরের নিরাপত্তায় পূজা উদযাপন করা হবে।
সিলেটে ঝুঁকিপূর্ণ কোনো মণ্ডপ নেই উল্লেখ করে পূজা উদযাপন পরিষদের এ নেতা বলেন, পূজামণ্ডপ কোনটা ঝুঁকিপূর্ণ সেটা প্রশাসন শনাক্ত করে থাকে। সেটা তারা ভালো বুঝতে পারবে। তবে পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা কোনো মণ্ডপকেই ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছি না। সবগুলো মণ্ডপই ঝুঁকিমুক্ত আছে।
মুত্যুঞ্জয় ধর ভোলা বলেন, মহালয়া উপলক্ষে গত তিনদিন দেবীর উপর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ধর্মীয় সঙ্গীত ও গীতা পাঠের উপর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুস্থদের মাঝে সেলাই মেশিন ও বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। বিনামূল্যে রক্ত দান করা হয়েছে। আজকে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।