ত্রিভুজ প্রেমের বলি ডা. আমিরুল

2 hours ago 4
নাটোরে ডা. এ এইচ এম আমিরুল ইসলামের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। নিহতের মালিকানাধীন জনসেবা হাসপাতালে কর্মরত এক নার্সকে কেন্দ্র করে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বরখাস্তকৃত ব্যক্তিগত সহকারী আসাদুল আলী আসাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ৬টার দিকে জনসেবা ক্লিনিকে নাটোর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানায়। গ্রেপ্তার আসাদুল আলী আসাদ বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার এলাচ ফকিরের পাড় গ্রামের ইলিয়াস আকন্দের ছেলে। অন্যদিকে নিহত ডা. আমিরুল সিংড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জনসেবা হাসপাতালটির মালিক ও পরিচালক ছিলেন।  পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডা. আমিরুল ইসলাম রোববার রাতে নিজের মালিকানাধীন বেসরকারি হাসপাতাল জনসেবা হাসপাতালেই ছিলেন। সোমবার সকাল ১০টার পর থেকে কক্ষে তার কোনো সাড়া না পেয়ে হাসপাতালের কর্মচারীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরে তারা দরজা ভেঙে গলাকাটা অবস্থায় ডা. আমিরুলকে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দিলে পুলিশ এসে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে। সংবাদ সম্মেলনে নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন জানান, ডা. আমিরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধারের পর মঙ্গলবার রাতে তার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার এলাচ ফকিরপার গ্রাম থেকে সন্দেহভাজন আসামি আসাদুল আলী আসাদকে গ্রেপ্তার করে।  পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আসাদ জানায়, তিন বছর আগে এই জনসেবা হাসপাতালে চাকরি নেন তিনি। এর মধ্যে হাসপাতালে কর্মরত এক নার্সের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের পরিসমাপ্তি টানার জন্য এ বছরই তাদের বিয়ের কথা ছিল। কিন্তু হাসপাতালের মালিক আমিরুল ইসলামের সঙ্গে প্রেমিকার সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে গত ২৫ আগস্ট তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি এবং হাতাহাতি হয়। এই ঘটনায় ডাক্তার আমিরুল ইসলাম আসাদকে চাকরিচ্যুত করেন। এর পরই আসাদ তার গ্রামের বাড়ি বগুড়ার ধুনটে চলে যান। সেখানে গিয়ে ডা. আমিরুল ইসলামের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার চিন্তা করেন।  তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত আসাদ বগুড়ার একটি দোকান থেকে একটি বোরকা এবং দুটি চাকু কিনে নিয়ে আসেন। নাটোরে আসার পর তিনি বোরকা পরে ৩১ আগস্ট রাতে হাসপাতালে অবস্থান করেন। সময় ও সুযোগ বুঝে আসাদ ডা. আমিরুলের বিশ্রাম কক্ষে খাটের তলায় লুকিয়ে পড়েন। রাত ১টার পরে যখন ডাক্তার আমিরুল ঘুমের ওষুধ খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েন তখন আসাদ খাটের তলা থেকে বেরিয়ে এসে তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর ভোর ৪টার দিকে আবারও বোরকা পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বগুড়া চলে যান। পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন বলেন, জনসেবা হাসপাতালে কর্মরত ওই নার্সের সঙ্গে ত্রিভুজ প্রেমের কথা স্বীকার করে আসাদ। সেই মেয়েকে কেন্দ্র করে প্রতিশোধ নিতেই ডা. আমিরুল ইসলামকে হত্যার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে।  তিনি আরও বলেন, যাদের আটক করা হয়েছিল আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আপাতত পুলিশ হেফাজতেই রাখা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি চাকু নাটোরের সিংড়া উপজেলার রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু আসাদের ব্যবহৃত বোরকাটি নদীতে ফেলে দেওয়ায় এখনো উদ্ধার করা যায়নি।  
Read Entire Article