পুলিশের পেশার সঙ্গে কৃষি কাজের সখ্যতা খুবই বিরল। তবে দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা তার ব্যতিক্রমী ও সৃজনশীল উদ্যোগের মাধ্যমে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তিনি থানার পরিত্যক্ত জমিকে কৃষি কাজে ব্যবহার করে নতুন বার্তা দিয়েছেন।
সরেজমিনে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার এক বিঘা পরিত্যক্ত জমি এখন শাক-সবজির বাগানে রূপ নিয়েছে। সেখানে চাষ হচ্ছে আলু, বেগুন, মুলা, পেঁপে, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, টমেটোসহ বিভিন্ন ফসল। মাচা তৈরি করে লাউ, মিষ্টিকুমড়া, শসা, করলা, সিম উৎপাদিত হচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে আম, কাঁঠাল, কলা ও বড়ই গাছ।
থানা প্রাঙ্গণের এই সৃজনশীল রূপান্তর শুধু থানার সৌন্দর্য বাড়ায়নি, বরং আগত সেবাগ্রহীতাদের মুগ্ধ করেছে। অনেকে এই উদ্যোগ দেখে নিজেদের বাড়ির পরিত্যক্ত জমি কাজে লাগানোর অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন।
থানায় সেবা নিতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা একরামুল হক বলেন, আগে এই জায়গাগুলো ঝোপঝাড়ে ঢাকা ছিল। এখন সেখান থেকে উৎপাদিত হচ্ছে শাক-সবজি। এটি থানার পরিবেশকে আরও সুন্দর করেছে।
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, আমি ওসি হিসেবে দেবীগঞ্জ থানায় যোগদান করার পর ডিআইজি এবং এসপি থানা পরিদর্শনে আসেন। এ সময় থানার পতিত জমিগুলো কাজে লাগিয়ে থানার সৌন্দর্যবর্ধনের দিকনির্দেশনা দেন। সে নির্দেশনার আলোকে আমি এবং আমার ফোর্স থানার পতিত জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসি এবং বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও ফুলের বাগান করি।
তিনি আরও বলেন, এখানে যে সবজি বাগান রয়েছে তা শতভাগ অর্গানিক। এখানকার সবজি আমার পরিবার এবং থানার মেসের সবজি চাহিদা পূরণ করছে। এ উদ্যোগ থানায় আসা সেবাগ্রহীতাদেরও উৎসাহ দিচ্ছে নিজেদের জমি কাজে লাগানোর জন্য।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাঈম মোর্শেদ এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘এটি একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। আমরা কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করি, এটি পতিত জমি চাষে সাধারণ মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।’
ওসি সোয়েল রানার এই উদ্যোগ শুধু থানার পরিবেশকেই সবুজে ভরিয়ে তুলছে না, বরং কৃষি কাজের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও সচেতনতা বাড়িয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে।