সাজেদুল ইসলাম রাব্বি
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক সময়ে কেবল সিজিপিএ থাকা যথেষ্ট নয়। শিক্ষাজীবন শেষের পর জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হয়। সেই অধ্যায়ে টেকসই সাফল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজন বাস্তব দক্ষতা। এগুলো শিক্ষার্থীকে কেবল প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখে না বরং আত্মবিশ্বাসী এবং সমাধানমুখী করে তোলে।
কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতার মধ্যে একটি হলো যোগাযোগের দক্ষতা। যোগাযোগের দক্ষতা মানে কেবল কথা বলা বা লেখা নয়। এটি হলো নিজের চিন্তা, অনুভূতি এবং ধারণাকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করার ক্ষমতা। শিক্ষার্থী যখন নিজের মতামত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উপস্থাপন করতে পারে; তখন সে একাডেমিক প্রেজেন্টেশন, গ্রুপ ডিসকাশন বা চাকরির সাক্ষাৎকারে সফল হতে পারে। কার্যকর যোগাযোগ অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক গঠনের ক্ষেত্রেও সহায়ক, যা দীর্ঘমেয়াদে পেশাগত সাফল্যের ভিত্তি গড়ে।
আরেকটি দক্ষতা হলো সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা। জীবন এবং পেশাজীবনে চ্যালেঞ্জ আসবেই। সমস্যার মুখোমুখি হয়ে কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করার দক্ষতা আপনাকে আলাদা করবে। এটি শুধু শিক্ষার্থীকে একাডেমিক সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে না বরং পেশাগত জীবনে জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলার শক্তি দেয়। সুপরিকল্পিত ও সৃজনশীল সমাধান মানুষকে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখে।
নেতৃত্ব এবং দলগত কাজের দক্ষতার ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী বা পেশাজীবীর জন্য দলকে পরিচালনা করার ক্ষমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নেতৃত্ব মানে কেবল নির্দেশ দেওয়া নয় বরং দলের সদস্যদের মধ্যে সমন্বয় ও উদ্দীপনা তৈরি করা। দলগত কাজের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী কেবল নিজের দক্ষতা নয়, পুরো দলের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে পারে।
পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। সময়, প্রযুক্তি এবং পেশাগত চাহিদা পরিবর্তিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যেসব শিক্ষার্থী নতুন পরিস্থিতি বা চ্যালেঞ্জের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে, তারা দীর্ঘমেয়াদে অনেক এগিয়ে থাকে। খাপ খাইয়ে নেওয়া শিক্ষার্থীকে শুধু টিকে থাকতে সাহায্য করে না বরং নতুন সুযোগও তৈরি করে।
সময় ব্যবস্থাপনা, লক্ষ্য নির্ধারণ এবং শেখার ক্রমাগত আগ্রহ একজন শিক্ষার্থীকে সাফল্যের পথে ধরে রাখে। সেলফ ম্যানেজমেন্ট তথা নিজের দায়িত্ব বোঝা, পরিকল্পনা করা এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে সহায়ক হয়। গ্রোথ মাইন্ডসেট হলো ক্রমাগত শেখার মনোভাব, যা শিক্ষার্থীকে নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণে উৎসাহী করে।
মোটকথা, সিজিপিএ শুধু সুযোগের দরজা খুলে দেয়। কিন্তু সেই দরজার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি আসে দক্ষতা থেকে। বাস্তব দক্ষতা শিক্ষার্থীকে শুধু চাকরির জন্য নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হতে সাহায্য করে। সম্ভাবনার নতুন পথ তৈরি করে।
লেখক: শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, ভোলা সরকারি কলেজ, ভোলা।
এসইউ/জেআইএম