দরপত্র ছাড়াই ৭০ হাজার টাকায় ইজারা কলেজের ১৮ বিঘা জমি

2 hours ago 5

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের প্রায় ১৮ বিঘা কৃষিজমি টেন্ডার ছাড়াই মাত্র ৭০ হাজার টাকায় এক বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আম বাগান দেওয়া হয়েছে ৯৫ হাজার টাকায়। নামমাত্র মূল্যে ইজারা দেওয়ায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। এমনকি ইজারার বিষয়ে জানেও না কলেজের টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি।

এলাকাবাসী জানান, টেন্ডার ছাড়াই একই ব্যক্তির কাছে ইজারা দেওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কলেজের একজন শিক্ষক অধ্যক্ষকে ভুল বুঝিয়ে এসব করছেন। তিনি এর আগেও একইভাবে কলেজের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। পুনরায় যাতে দরপত্র আহ্বান করা হয় সেজন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান, একটি চক্র দীর্ঘদিন কলেজের লেক, পুকুর, কৃষি জমি, আম বাগান ভোগ দখল করতো কোনো রকম টেন্ডার ছাড়াই। কলেজের সবকিছু একক নিয়ন্ত্রণ করতেন কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুল মিল্লাত। আবারও তিনি কলেজের অধ্যক্ষকে ভুল বুঝিয়ে সবকিছু নামমাত্র মূল্যে ইজারা দিয়েছেন তার পছন্দের লোকদের। কলেজের টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি থাকলেও তারা পুতুলের ভূমিকা পালন করেছেন।

এলাকাবাসী আরও জানান, কলেজের লেক ও পুকুর ৭০ হাজার টাকায় ও ১৮ বিঘা জমি মাত্র ৭০ হাজার টাকায় বিএনপি নেতা মতিনুর রহমানকে ইজারা দেওয়া হয়। এছাড়া কলেজের আম বাগান ইজারা দেওয়া হয়েছে মাত্র ৯৫ হাজার টাকায়। ওপেন দরপত্র আহ্বান করা হলে সবকিছু তিনগুণ দামে বিক্রি হতো বলে এলাকাবাসী জানান। এমনকি রাতের আঁধারে বদরুল মিল্লাত হোস্টেল সংলগ্ন পুকুরের মাছ বিক্রি করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিনুর রহমান কচি বলেন, আমি কলেজের খাল ও ছোট পুকুরটি লিজ নিয়েছি। হোস্টেলের পুকুর লিজ নিইনি। সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুল মিল্লাতের কাছ থেকে শুধুমাত্র মাছগুলো ৫০ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছি।

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুল মিল্লাত বলেন, আমি পুকুরের মাছ বিক্রি করার কে? কলেজের অধ্যক্ষ ও ক্রয় ও টেন্ডার কমিটি আছে। আমি কোনো মাছ বিক্রি করিনি। আমাকে জড়িয়ে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ক্রয় ও টেন্ডার কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবস্থাপন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোন্তাজুর রহমান বলেন, কলেজে শুধুমাত্র খাল ও ছোট পুকুর ও আম গাছগুলোর টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। কৃষি জমির টেন্ডার এখনও হয়নি।

তবে ইজারা দেওয়া হয়ে গেছে জানালে তিনি বলেন, সেটা কলেজের অধ্যক্ষ বলতে পারবেন, আমি জানি না। আপনি অধ্যক্ষের কাছে শোনেন।

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল হাসেম জানান, কলেজের খাল, ছোট পুকুর, আম বাগান ও কৃষি জমি লিজ দেওয়া হয়ে গেছে।

এত কম মূল্যে ইজার দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আগেতো মোটেও ইজারা হত না। আমি আসার পর সবকিছু ইজারা দিয়ে সরকার কিছু রাজস্ব পাচ্ছে।

১৮ বিঘা জমি মাত্র ৭০ হাজার টাকায় ইজারা দিয়েছেন, কলেজের টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি জানে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তুমি কলেজে এসো, কাগজপত্র দেখে যাও।

কলেজের একজন শিক্ষক সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে, এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সেটা সম্ভব না।

এফএ/এমএস

Read Entire Article