ভারতের নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দর্শনা রেলবন্দর দিয়ে আমদানি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। তবে আগের তুলনায় আমদানির গতি উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। এতে রাজস্ব আয় ও শ্রমিকদের কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তারা।
দর্শনা সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের বণ্টন বিষয়ক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগের তুলনায় বর্তমানে মাত্র ১০ শতাংশ মালপত্র ঢুকছে। আগে যেখানে মাসে ৩০-৪০টি রেল রেক বন্দরে আসতো, এখন সেখানে মাসে ৩-৪টির বেশি ঢুকছে না। আমরা চাই চলমান সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক।’
বন্দর সূত্রে জানা যায়, দর্শনা রেলবন্দর দিয়ে মূলত সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল ক্লিংকার, ফ্লাই অ্যাশ, লাইমস্টোন এবং পোল্ট্রি শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় রেপসিড (একধরনের তেলবীজ) আমদানি করা হয়। পাশাপাশি পাথরও আমদানি হয় এই বন্দর দিয়ে। তবে যেসব পণ্যে ভারত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেগুলোর আমদানি দর্শনা বন্দর দিয়ে না হওয়ায় সরাসরি নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েনি। সাম্প্রতিক ঘটনায় ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষের সময়সূচির হেরফের এবং অভ্যন্তরীণ জটিলতার কারণে নিয়মিত রেল রেক আসছে না। ফলে আমদানির গতি হ্রাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন:
- বাংলাদেশি পোশাক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা, ঈদ-পূজায় দাম বাড়ার শঙ্কা
- ভারতে পণ্য রপ্তানিতে অতিরিক্ত কত পথ পাড়ি দিতে হবে?
- কয়লা আমদানি বন্ধ, পাথরে বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ীরা
সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি ও শ্রমিকরা বলছেন, কার্যক্রম সচল থাকলেও কাজের পরিমাণ কমে গেছে। পণ্য ওঠানামা কমে যাওয়ায় আয়ও কমেছে। অনেক শ্রমিক কাজ হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন।
দর্শনা রেলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান হাবু বলেন, ‘আমাদের এখানে গত ৫ আগস্টের পর থেকে কিছুটা অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে। তবে রেলপথে পণ্য পরিবহন এখনো চলছে, কিন্তু আগের মতো গতিশীলতা নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন।’
দর্শনা কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭৮ কোটি টাকা। সেখানে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৩৪ কোটি চার লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম ছিল। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা ঠেকেছে একদম তলানিতে। তবে আগামী জুন মাসের পরেই রাজস্ব আদায়ের হিসাবটা জানা যাবে।
এ বিষয়ে দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মির্জা কামরুল হক জানান, বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের কোনো নিষেধাজ্ঞার খবর এই রেলবন্দরে আসেনি। তাই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব চুয়াডাঙ্গার দর্শনা রেলবন্দরে পড়বে না। তবে আগে থেকেই আমদানি-রপ্তানি খুব সীমিত রয়েছে।
এসআর/এমএস