যখন তখন যে কেউ দাবি আদায়ের জন্য রাস্তা অবরোধ করছেন; এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বলে উল্লেখ করেছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, রাস্তা দাবি আদায়ের স্থান হতে পারে না।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে জাপানি সংস্থা জাইকার কারিগরি সহযোগিতায় ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিআরএসপি প্রজেক্টের অধীনে সড়ক নিরাপত্তা পোস্টার ও স্লোগান প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি রাজনৈতিকদলের নেতাদের অনানুষ্ঠানিকভাবে এরই মধ্যে অনুরোধ করেছি তারা যেন রাস্তায় সভা-সমাবেশ না করে। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক নেতাদের আমন্ত্রণ জানাবো। এ বিষয়ে দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করছি। পাশাপাশি সব নাগরিকের কাছে আহ্বান জানাবো; আপনাদের যার যা দাবি দাওয়া আছে; সব দাবি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসুন। রাস্তা অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবেন না।
পাঁচজন শিক্ষার্থী যে কোনো ইস্যুতে রাস্তায় নেমে অবরোধ করে বসে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে সব দায়-দায়িত্ব ডিএমপি কমিশনারের ওপর অর্পণ করা ঠিক নয়। বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশাসন শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে ভেতর রাখার চেষ্টা করুন। তাদের কথা শুনে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন।
মব জাস্টিস নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, উত্তরায় সাবেক সিইসি নূরুল হুদার মবকাণ্ডে একজন অ্যারেস্ট আছে। আমরা একটা মামলাও নিচ্ছি। আমরা মব জাস্টিস অ্যালাউ করছি না। অনেক মামলাও নিয়েছি। মব জাস্টিসের ঘটনায় আমরা ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা নিয়েছি। মব জাস্টিসের এক-দুটি ঘটনায় পুলিশ অফিসারদের কর্তব্যে অবহেলার কারণে কয়েকজনকে সাসপেন্ড ও শাস্তি দিয়েছি। তিন-মাস চার মাস আগে যে পরিমাণ মব জাস্টিস ছিল এখন সে পরিমাণ নেই।
তিনি বলেন, যেই বাড়িতে আসামি আছে রাতে সেখানে হানা দেওয়া, দরজা ভাঙা বা কিছু করা এ ধরনের ঘটনা অ্যালাও করছি না। এ কারণে সম্প্রতি এ ধরনের ঘটনা কমে গেছে। কেউ নিজে কোনো অপরাধীকে না ধরে পুলিশকে খবর দেবেন, আমরা সেখানে যাবো এবং আমরা তাদের ধরবো। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। যেসব অফিসার এ ধরনের ঘটনায় ব্যবস্থা নেবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আদাবর থানায় একটি চাঁদাবাজির ঘটনায় আমরা মামলা নিয়েছি এবং গ্রেফতার করেছি।
জাপানি সংস্থা জাইকার সহযোগিতায় ঢাকা রোড ট্রাফিক প্রজেক্টের অধীনে রোড সেফটি ইস্যুতে সমন্বিতভাবে কাজ করছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন বিআরটিএ এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।
অনুষ্ঠানের রোড সেফটি ইস্যুতে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার ও স্লোগান প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় পোস্টার বিভাগে রাজধানীর রাস্তাঘাটে চলাচলের ক্ষেত্রে নাগরিকদের সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের পোস্টার তৈরি করেন। এ বিভাগ থেকে শ্রেষ্ঠ ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। অন্যদিকে স্লোগান বিভাগে শ্রেষ্ঠ স্লোগান উদ্ভাবনকারী বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাইকার বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রধান তমোহিদি ইচিগুছি, নিপ্পন সিগন্যাল বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আকিফুমি ইওসিদা, জাপানি কোম্পানি হোন্ডার বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সুসুমু মরিসাওয়া, জেট মেম্বার ইওসিহিসা আসাদা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার।
টিটি/এমআইএইচএস/এমএস