দিনাজপুরের সেই নবজাতককে দত্তক নিতে চান ২০০ জন

6 hours ago 9

 

দিনাজপুরে মাসহ স্বজনদের সন্ধান না পাওয়া সেই নবজাতককে দত্তক নিতে হিড়িক পড়েছে। এ পর্যন্ত অন্তত ২০০ জন আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে। আবেদনকারীদের তালিকায় চিকিৎসক, নার্স, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিশু ওয়ার্ডে এক নবজাতককে ভর্তি করেন নানা-নানি। ওয়ার্ডের নবজাতক ইউনিটের অতিরিক্ত বেড নম্বর ৩-এ রাখা হয় শিশুটিকে। এসময় চিকিৎসক শিশুটিকে দেখতে গিয়ে শিশুটির মা কে জানতে চান। সেসময় শিশুর সঙ্গে থাকা এক দম্পতি জানান, তারা নানা-নানি, মা নিচে রয়েছেন।

চিকিৎসক শিশুটির মাকে নিয়ে আসতে বললে ওই দুজন আনতে নিচে যাচ্ছেন বলে জানান। তবে তারা আর ফিরে আসেননি। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগীর স্বজনরা শিশুটিকে দেখতে ভিড় জমান। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করে শিশুটিকে ওয়ার্ডের ৫১৭ নম্বর ডক্টরস রুমে নেওয়া হয়।

এসময় শিশুটির পাশে রেখে যাওয়া একটি ব্যাগে চিরকুট ও কিছু ওষুধ পাওয়া যায়। চিরকুটে লেখা ছিল—‘আমি মুসলিম। আমি একজন হতভাগী পরিস্থিতির শিকার। বাচ্চা রেখে গেলাম, দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন। বাচ্চার জন্ম তারিখ ৪-১১-২০২৫, রোজ মঙ্গলবার। এগুলো সব বাচ্চার ওষুধ, আমি সুমলমান জাতির মেয়ে।’

আরও পড়ুন

নবজাতকের পাশে চিরকুট ‘আমি এক হতভাগি, বাচ্চাটাকে কেউ নিয়ে যাবেন’

ডক্টরস রুমে শিশুটির দেখভাল করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক গোলাম আহাদ, ডা. সানাউল্লাহ ও ডা. পল্লব কুমার দাস।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্টার্ন চিকিৎসক সানাউল্লাহ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে একটি শিশুকে পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডের নবজাতক ইউনিটের অতিরিক্ত ৩ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়। এসময় নবজাতকের সঙ্গে দুজন ছিলেন। পরিচয় জানতে চাইলে তারা জানান, তারা শিশুটির নানা-নানি। শিশুটির মা কোথায় জানতে চাইলে তারা বলেন, নিচে আছে।’

চিকিৎসক আরও বলেন, ‘শিশুটির মাকে নিয়ে আসতে বললে তারা আনতে যাচ্ছি বলে আর আসেননি। বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালককে জানালে তিনি আমাদেরকে শিশুটির দেখাশোনা করার জন্য বলেন। পরে আমরা শিশুটির স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে উৎসুক মানুষের ভিড় এড়াতে ডক্টরস রুমে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করি। শিশুটি এখন সুস্থ আছে।’

ইন্টার্ন চিকিৎসক সানাউল্লাহ জানান, শিশুটির মা ও স্বজনদের অনুসন্ধান চলছে। তবে শিশুটিকে দত্তক নিতে কমপক্ষে ২০০ জন যোগাযোগ করছেন। শিশুটির স্বজন না পাওয়া গেলে তাকে কার কাছে দত্তক দেওয়া হবে, সে বিষয়ে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। তবে যারা দত্তক নিতে চাইছেন তাদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন। যারা শিশুটিকে নিতে চাচ্ছেন তারা সবাই নিঃসন্তান।

এমদাদুল হক মিলন/এসআর

 

 

 

 

 

 

 

 

Read Entire Article