ঈদুল আজহার আর অল্প কিছুদিন বাকি। এরইমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গরুর খামারিরা। দেখা মিলছে বড় বড় বাহারি সব নামের গরুর। এরমধ্যে এবার কোরবানির হাট মাতাচ্ছে বাদশাহ। ২৫ মণ ওজনের হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটির দাম হাঁকা হচ্ছে ১০ লাখ টাকা। রূপগঞ্জে সাপ্তাহিক হাট ছাড়া এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে পশুর হাট না বসলেও এরইমধ্যে আলোচনায় এসেছে বাদশা।
এদিকে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পশুর মালিক ও খামারিরা লালন-পালন করা গরুগুলোকে বিভিন্ন নামে নামকরণ করছেন। বিশালদেহী বাদশা নামের গরুটি এ তালিকায় অন্যতম। আকারে বিশাল হলেও স্বভাবে খুবই ধীরস্থির। দীর্ঘ পরিচর্যার পর আকর্ষণীয় এ কোরবানির পশুটি এখন বিক্রির উপযোগী হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫৫৪টি ছোট-বড় খামারে ১৫ হাজার ৮৮৭টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ৪০০টি পশু বেশি। স্থানীয় চাহিদার অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত থাকলেও কোরবানির হাট কাঁপানোর মতো গরুর সংখ্যা খুবই কম। এরমধ্যে অন্যতম বাদশা। এটিকে প্রস্তুত করেছে উপজেলার ভুলতা এলাকার গাউছিয়া ডেইরি ফার্ম। আকর্ষণীয় এই গরুটি দেখতে ভিড় করছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা।
বিশালাকারের গরুটি দেখতে আশপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসছে মানুষ। গরুটির সঙ্গে অনেকেই ছবি ও ভিডিও ধারণ করছেন। আবার কেউ কেউ এগুলো ফেসবুকেও পোস্ট করছেন।
গাউছিয়া ডেইরিতে গিয়ে দেখা গেছে, রাজকীয় ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বাদশা। গাড় সাদা রঙের গরুটির যেমন গঠন, তেমনই স্বাস্থ্য। তবে চুপচাপ শান্ত স্বভাবের। সাড়ে ৩ বছরের গরুটির নাম রাখা হয়েছে বাদশা। গরুটি প্রায় ৮ফুট লম্বা, উচ্চতা ৫ ফুট। এর দাম হাঁকা হচ্ছে ১০ লাখ টাকা।
প্রতিদিন গরুটির খাদ্য তালিকায় থাকে গমের ভুসি, ধানের খড়, ছোলা ভাঙা, ভুট্টা ভাঙা, সয়াবিন খৈল আর কাঁচাঘাস। গরুটি দিনে ৭০০ টাকার খাবার খায়। এরই মধ্যে বিভিন্ন ক্রেতা ও ব্যাপারীরা সাড়ে ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ পর্যন্ত দাম উঠিয়েছেন।
গাউছিয়া ডেইরির ম্যানেজার সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, বাদশাহর খাবারের পেছনে সাড়ে তিন বছরে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এছাড়া শ্রমিক বাবদ আরও প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সবমিলিয়ে বাদশাকে কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করতে প্রায় ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবারের ঈদে কোরবানির জন্য ৬০টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। যার মধ্যে বাদশা সবচেয়ে আকর্ষণীয়। বাদশাকে অনেকে দেখছেন, দামও বলছেন। তবে সরাসরি খামার থেকে যদি কেউ কেনে তাহলে বিক্রি করবো। নইলে উপজেলার পশুর হাটের উঠাব। তবে আমরা ৯ থেকে ১০ লাখ টাকার ভেতর গরুটি বিক্রি করতে চাচ্ছি। কারণ গরুটি লালন-পালন করতে আমাদের বেশ খরচ হয়েছে।
গরুটির এমন নামকরণের বিষয়ে জানতে চাইলে সোহেল রানা বলেন, গরুটির ছোটবেলা থেকেই বাদশার মতো ভাব ছিল। এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার গাউছিয়া কর্পোরেশনের মালিক দিপু ভুইয়া সাহেব আদর করেই তার নাম রাখেন বাদশা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রিগান মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলায় চাহিদার তুলনায় খামারি পর্যায়ে অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত রয়েছে। হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পালনে বেশিরভাগ মানুষ আগ্রহী নয়। তবে গাউছিয়া ডেইরি এই জাতের গরু পালন করে সফল হয়েছে। খামারিদেরকে প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে বছরজুড়ে নানাভাবে সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।
এফএ/এএসএম