দু’দিনেই প্রাণ নিতে পারে ‘মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া’, ছড়াচ্ছে জাপানে

3 months ago 19

‘মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়ার’ কারণে তৈরি হয় এমন এক রোগ, যা মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। এমন ভয়ংকর রোগটি দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে জাপানে।

দেশটির জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরে ২ জুন পর্যন্ত স্ট্রেপ্টোকক্কাল টক্সিক শক সিনড্রোম (এসটিএসএস)-এ আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭৭-এ পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের ১২ মাসে আক্রান্ত রেকর্ড ৯৪১ জনের চেয়েও বেশি।
১৯৯৯ সাল থেকে এই রোগে আক্রান্তদের হিসাব রাখছে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন>>

গ্রুপ এ স্ট্রেপ্টোকক্কাস (জিএএস) সাধারণত ‘স্ট্রেপ থ্রোট’ নামে পরিচিত। এর কারণে শিশুদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়া এবং গলা ব্যথা হয়। তবে এই ব্যাকটেরিয়ার কয়েকটি ধরনের কারণে অঙ্গে ব্যথা এবং ফোলা, জ্বর, নিম্ন রক্তচাপও দেখা দিতে পারে। এ ধরনের লক্ষণগুলো খুব দ্রুত বিকশিত হয় এবং ফলশ্রুতিতে নেক্রোসিস, শ্বাসকষ্ট, অঙ্গ অচল হয়ে যাওয়া, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সের মানুষের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

টোকিও উইমেনস মেডিকেল ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ বিভাগের অধ্যাপক কেন কিকুচির মতে, বেশিরভাগ মৃত্যুই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘটে। তিনি বলেন, হয়তো সকালবেলা রোগীর পায়ে ফোলাভাব লক্ষ্য করেছেন, এটি দুপুরের মধ্যেই হাঁটু পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি মারা যেতে পারেন।

জাপান ছাড়াও বিশ্বের আরও কিছু দেশে সম্প্রতি এই ব্যাকটেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। ২০২২ সালের শেষের দিকে ইউরোপের অন্তত পাঁচটি দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) আক্রমণাত্মক গ্রুপ এ স্ট্রেপ্টোকক্কাস (আইজিএএস) রোগ বিস্তারের খবর দিয়েছিল, যার মধ্যে এসটিএসএস-ও ছিল।

ডব্লিউএইচও বলেছে, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর থেকেই এই রোগ বেশি ছড়াচ্ছে।

কিকুচি বলেছেন, সংক্রমণের বর্তমান হার অব্যাহত থাকলে জাপানে চলতি বছর এ ধরনের রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫০০ জনে পৌঁছাতে পারে, যার মৃত্যুহার থাকতে পারে ৩০ শতাংশ। এটিকে ‘ভয়ানক’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

প্রাণঘাতী এই রোগ থেকে বাঁচতে মানুষকে হাতের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং যেকোনো বাহ্যিক ক্ষতের চিকিৎসা করানোর আহ্বান জানিয়েছেন কেন কিকুচি। তিনি বলেছেন, রোগীরা তাদের অন্ত্রে জিএএস বহন করতে পারেন, যা মলের মাধ্যমে হাতকেও দূষিত করতে পারে।

সূত্র: ব্লুমবার্গ
কেএএ/

Read Entire Article