সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, রাশিয়া, মরক্কো ও কাফকো থেকে ২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ১৭৮ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ৬০ টাকা।
এর মধ্যে এক লাখ ১০ হাজার টন ইউরিয়া, ৬০ হাজার টন টিএসপি এবং ৩৫ হাজার টন এমওপি সার কেনা হবে। এছাড়া ১৯৯ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই সার ও ফসফরিক এসিড কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
জানা গেছে, ফাটিগ্লোব থেকে জিটুজি চুক্তির আওতায় ২০০৭ সাল থেকে ইউরিয়া সার আমদানি করা হয়। আগের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি সভার অনুমোদন নিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ফাটিগ্লোব থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি সই হয়।
ফাটিগ্লোবের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রথম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১ কোটি ৫৬ লাখ ৯৩ হাজার ২০০ মার্কিন ডলারে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৯২ কোটি ৮ লাখ ৪৭ হাজার ৬৮০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের মূল্য ৩৯২.৩৩ মার্কিন ডলার।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জন্য সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাঙ্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন এবং আপদকালীন ও জরুরি পরিস্থিতি এবং দেশীয় কারখানায় সারের ঘাটতি মোকাবিলায় আরও ৩ লাখ মেট্রিক টনসহ মোট ৬ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি করা হয়।
সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি মেট্রিক টন ৩৯২.৩৩ মার্কিন ডলার হিসেবে ৪০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১ কোটি ৫৬ লাখ ৯৩ হাজার ২০০ ডলারে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৯২ কোটি ৮ লাখ ৪৭ হাজার ৬৮০ টাকা।
এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ-এর কাছ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি৷
জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পরিকল্পনা মোতাবেক কাফকো, বাংলাদেশ থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনার সংশোধিত চুক্তি সই হয়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সপ্তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার জন্য প্রাইস অফার পাঠানোর অনুরোধ করা হলে কাফকো, বাংলাদেশ প্রাইস অফার পাঠায়।
কাফকোর সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিক টন ৩৮০ ডলার হিসেবে ১ কোটি ১৪ লাখ ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩৯ কোটি ৫৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
এদিকে বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার জেএসসি ‘ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন’ ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিএডিসি কর্তৃক রাশিয়া থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব সিসিইএ সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়। আগের চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় বিদ্যমান চুক্তির শর্তগুলো অভিন্ন রেখে চলতি বছরের ২৪ জুলাই পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে।
সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে জেএসসি ‘ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন’ থেকে ষষ্ঠ লটে ৩৫ হাজার টন এমওপি সার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যে ১ কোটি ২৪ লাখ ৬৮ হাজার ৭৫০ ডলারে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৫২ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সারের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৫৬.২৫ ডলার।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বিএডিসির মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিএডিসি কর্তৃক মরক্কো থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নবায়িত চুক্তির মাধ্যমে টিএসপি সার আমদানির প্রস্তাব সিসিইএ সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়। আগের চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় চলতি বছরের ২ জুলাই পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা হয়।
সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে নবম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যে ১ কোটি ৬৪ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলারে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২০১ কোটি ২২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন টিএসপি সারের প্রস্তাবিত এফওবি দর ৫৪৮ ডলার।
এছাড়া বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ১০ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে ১ কোটি ৬৪ লাখ ৪০ হাজার ডলারে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২০১ কোটি ২২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন টিএসপি সারের প্রস্তাবিত এফওবি দর ৫৪৮ ডলার।
এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএপিএফসিএল) জন্য ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷
জানা গেছে, ডিএপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক এসিড বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র একটি দরপত্র জমা পড়ে। প্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই, ইউএই থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড ১৯৯ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকায় কেনার প্রত্যাশামূলক অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন ফসফরিক এসিডের দাম ধরা হয়েছে ৭৭৫ মার্কিন ডলার।
এমএএস/এমকেআর/এমএস

8 hours ago
4









English (US) ·