দুই সাবেক এমপি ও তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধার মামলা
ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম ও তার বড় ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজনসহ ২১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুজ্জোহা বিস্ফোরক আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি শওকত আলী সরকার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শামসুজ্জোহা বাদী হয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধার শামসুজ্জোহা ওই উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের আমতলা এলাকার মৃত এজাব উদ্দীনের ছেলে।
মামলায় এজাহারনামীয় ৬৪ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন, সাবেক এমপি দবিরুল ইসলামের দুই ভাই বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, ছোট ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলীর বড় ছেলে বড়বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকরাম আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি প্রবীর কুমার রায়, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মজিবর রহমান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোমিনুল ইসলাম ভাসানী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী, সাবেক এমপি সুজনের ব্যক্তিগত সহকারী সাদেকুল ইসলাম প্রমুখ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) দবিরুল ইসলাম ও তার বড় ছেলে একাদশ সংসদের সাবেক সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজন এর নির্দেশে ১০০-১৫০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ককটেল ও পটকা নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুজ্জোহার তফসিলভুক্ত জমি দখল নেয়। এবং ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয় তারা। এ সময় সাবেক এমপি সুজনের সন্ত্রাসী বাহিনীরা মিল-চাতাল ও গাছপালা ধ্বংস করে প্রায় ১৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকার ক্ষতি করে।
পরে মামলা না করতে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিলেন দবিরুলের পরিবার ও তার লোকজন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিলে নেতা ও এমপিদের দ্বারা নির্যাতিতরা মুখ খুলতে শুরু করেন। তারই ধারাবাহিকতায় এই মুক্তিযোদ্ধা তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, মামলার প্রধান আসামি সাবেক এমপি দবিরুল ইসলাম ও তার ছেলে সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজন বিভিন্ন মামলায় বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।