দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাজশাহী, বাড়ছে উৎপাদন

4 months ago 65

রাজশাহীতে খামারগুলোতে বাড়ছে দুধের উৎপাদন। বিশেষ করে চর ও গ্রাম পর্যায়ে দুধের উৎপাদন বেড়েছে। ফলে রাজশাহী এখন দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রাজশাহীতে দুধের চাহিদা ৫ দশমিক ৮ লাখ টন। গতবছর দুধ উৎপাদন হয়েছে ৫ দশমিক ৫ লাখ টন। চলতি বছরে সেই উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮ লাখ টন। দুধ উৎপাদনকারী গরুর সংখ্যা রয়েছে প্রায় তিন লাখ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজশাহীর পদ্মাপাড়ে ধু ধু বালুচর। প্রমত্তা পদ্মা শুকিয়ে নদীর মধ্যেই জেগেছে চর। চরের কিনারে হাজার হাজার গবাদিপশুর অস্থায়ী আশ্রয়স্থল, যা ‘বাথান’ নামে পরিচিত।

পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের চরখিদিরপুরের ১০ নম্বর বা মিডল চর চরগুলোর একটি। এই চরে তিনটি বাথানে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গরু, মহিষ ও ভেড়া রয়েছে।

রাখালরা জানান, দুধের দাম আগের চেয়ে বাড়ছে। এজন্য চরে গরুর দুধ উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছেন মালিকরা।

চরে একটি বাথানের মালিক শফিকুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, “এখানে কারও কারও ৫০-১০০টি গরু রয়েছে। যার ১০০টি রয়েছে তাকে ‘কোটিপতি’ বলা চলে। কারণ একেকটি গরুর দাম প্রায় লাখ টাকা। লাভের কারণেই এত চ্যালেঞ্জ নিয়ে গরুর মালিকরা বাথানে গরু রাখেন। এখন দুধের চাহিদা অনেক বেশি। ফলে ষাঁড়ের তুলনায় গাভি পালনে আগ্রহী স্থানীয়রা।”

দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাজশাহী, বাড়ছে উৎপাদন

চরের ঘোষ (গোয়ালা) নিরাময় দাস বলেন, প্রতিদিন এখান থেকে অন্তত ২০০-২৫০ কেজি দুধ নিয়ে যাই। এখান থেকে দুধ পরিবহন কষ্ট হলেও আসি। কেননা গরুগুলো মাঠের ঘাস খায়। এজন্য এর চাহিদাও বেশি।

আরেকটি বাথানের মালিক মো. বাচ্চু বলেন, হাজার হাজার গরুর খাবার প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা অনেক কষ্টকর। তারপরও গরুর সংখ্যা বেড়েছে। দুধও বেড়েছে। আগে এই চরে সবমিলিয়ে ২০০ গরু দুধ দিতো। এখন সেটি বেড়ে ৩৫০-৫০০ গরু হয়েছে।

তবে তিনি বলেন, গরুর দুধ উৎপাদন বাড়লেও আমরা ন্যায্য দাম পাই না। কেননা আমাদের নদী পার হতে হয়। এতেই খরচ বেড়ে যায়।

রাজশাহী বাঘা এলাকার খামারি এনামুল হক বলেন, ‘আগে দুটি গরু পালতাম (পালন করতাম)। পরে ষাঁড়ের পাশাপাশি গাভিও পালা শুরু করি। গত দুই বছরে নতুন করে চারটি গাভি কিনেছি। গাভিগুলো প্রতিদিন ২৫ কেজি দুধ দিচ্ছে। দামও ভালোই পাচ্ছি।’

কথা হয় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাজশাহীতে যথেষ্ট পরিমানে মাংস ও দুধ উৎপাদন হয়। এই জেলা দুধ ও মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিশেষ করে দুধের উৎপাদন বাড়ছে। গতবারের চেয়ে এবার উৎপাদন বেড়েছে।

সাখাওয়াত হোসেন/এসআর/এএসএম

Read Entire Article