দুবাই ফেরত প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাসহ ৬ দফা দাবি

2 hours ago 5

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে আন্দোলন করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও পাসপোর্ট থেকে নো-এন্ট্রি তুলে নেওয়াসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন আরব আমিরাত ফেরত প্রবাসীরা।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা।

সংবাদ সন্মলনে দুবাই ফেরত প্রবাসীরা বলেন, জুলাই বিপ্লবের সময় স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে মিছিল করেন তারা। আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মিছিলের সঙ্গে সম্পৃক্ত অথবা সম্পৃক্ত নয় অনেকের নামের তালিকা তৎকালীন কনস্যুলার জামালের মাধ্যমে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জমা দেন।

আরব আমিরাত ফেরত প্রবাসী খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, আমরা ড. ইউনূসের সঙ্গে বসে আমাদের দাবি তুলে ধরতে চাই। অতিদ্রুত প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চাই। আমরা তো দেশের মানুষের সঙ্গে একাত্মতা করে ওখানে আন্দোলন করেছি। আজ দেশে এসে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের কেউ ৬ মাস, ২ বছর ২০ বছর সেখানে থেকে এসেছি।

তিনি বলেন, আমরা চাই জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে আমাদের প্রবসীদের ত্যাগ লেখা হোক। আমাদের যারা ওখানে আন্দোলন করেছেন তাদের নামও ইতিহাসে লেখা হোক।

আরেক প্রবাসী আমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদেরকে যখন ফেরত পাঠানো হয়, বিমান বন্দরে এসে এক গ্লাস পানি পাইনি। তারা আমাদের ফুল দিচ্ছে, ফটোসেশন করছে, কিন্ত আমরা কতটা কষ্ট করে এসেছি সে খবর তারা শুনে নাই। নতুন বাংলাদেশে আমরা এখনো বঞ্চিত। প্রবাসীরা হাইকমিশনের কোনো সাহায্য পায় না। কোনো দেশেই পায় না। হাইকমিশন আর ওখানকার স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের তথ্যে আমরা গ্রেফতার হয়েছি।

প্রবাসীদের ৬ দাবি:

১। আরব আমিরাতসহ ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। যেমন-

(ক) যারা বিদেশ যেতে চায় সরকারি উদ্যোগে বিনা খরচে বিদেশ পাঠাতে ব্যবস্থ্য করা।

(খ) যাদেরকে দেশে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আছে যোগ্যতা অনুসারে তাদেরকে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

(গ) সেসব দেশে যারা ব্যবসায়ী ছিলেন এবং নতুন করে যারা উদ্যোক্তা হতে চায় তাদেরকে ব্যাংক/ যে কোনো সংস্থার মাধ্যমে বিনা সুদে প্রয়োজনীয় লোন দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

(ঘ) যারা বয়স্ক তাদের বিভিন্ন প্রকার সরকারি ভাতার আওতায় নিয়ে আসা।

২। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ ফেরত প্রবাসীদের নো-এন্ট্রি দিয়েছে, নো-এন্ট্রি তুলে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া।

৩। একই মামলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখনো গ্রেফতার চলমান রয়েছে, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে অতিদ্রুত গ্রেফতার প্রক্রিয়া বন্ধ করা তথা মামলাটি শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া। এছাড়া এ মামলায় এখনো সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগারে যেসব বাংলাদেশী প্রবাসী বন্দি আছেন তাদেরকে অতি দ্রুত মুক্ত করে নিয়ে আসা।

৪। যারা আমাদের নামের তালিকা সেসব দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দিয়েছিল বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সে সময়ের কূটনৈতিক, কনসাল জেনারেল বিএম জামাল সহ জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করা।

৫। ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশননের মতো একটি ট্রাস্ট গঠন করা যাতে দেশের স্বার্থে ক্ষতিগ্রস্ত যে কোনো প্রবাসী একটি ক্ষতিপূরণ পেতে পারে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরের তালিকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থনের কারণে কারা নির্যাতিত হয়ে দেশে আসা প্রবাসীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা। জুলাই বিপ্লবের বীর হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।

৬। বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের মুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার লক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চাই। সে অনুষ্ঠানের জন্য সম্মতি জ্ঞাপন ও আমন্ত্রণ পৌঁছানোর জন্য ৭ জনের প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি প্রদান করা।

আরএএস/এসএনআর

Read Entire Article