অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের সাড়ে তিন বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে রায়ে ৫ লাখ টাকা করে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে মামলার যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ঠিক করেন আদালত। রায় ঘোষণা সময় জামিনে থাকা এ দুই আসামি আদালতে হাজির হয়। রায়ের পর আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
মামলাটি দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূইয়া পরিচালনা করেন। দুদক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর আদালত অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন। ২০২০ সালের ৪ আগস্ট দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে তাদের দুজনের নামে মামলাটি করেন। ‘দুদক আইন, ২০০৪’-এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি করা হয়।
তদন্ত শেষে দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ প্রতিবেদন জমা দেন। ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেন দুদক।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্তোরাঁর খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন। যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি।
এছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসাভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগকৃত ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার এবং তার স্বামীর নামে জমা করা ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি অনুসন্ধানে।
অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় সাড়ে চার বছর কারাভোগের পর ২০২৪ সালে ২৪ জুন জামিনে কারামুক্ত হন।
এমআইএন/এমএএইচ/এমএস