দুর্নীতিবাজ, খুনি, স্বার্থান্বেষী মহলকে আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) গণসমাবেশে বিকেলে নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার তিনবার ক্ষমতায় থেকে দেশ পরিচালনা করেছে। তারা দেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার হয়নি। দিনের ভোট রাতে দিয়ে জোর করে ডাকাতের মতো দেশ পরিচালনা করেছে। এই ফ্যাসিস্ট খুনি সরকার, টাকা পাচারকারী এবং বিদেশিদের দালাল সরকার। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইসলামের ব্যাপারে যাতে ভুল ম্যাসেজ পায়, ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ করে এ আচরণগুলো শিক্ষা সিলেবাসে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, এ দেশে শতকরা ৯২ জন মুসলমান বসবাস করে। বাংলাদেশে ইসলামের সুন্দর ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। বিগত দিনের পরীক্ষিত দুর্নীতিবাজ, খুনি, স্বার্থান্বেষী মহল তাদের আর ক্ষমতায় আমরা দেখতে চাই না।
চরমোনাই পীর বলেন, নিছক দুই-একটা এমপি মন্ত্রিত্বের জন্য, সম্মান ও সম্পদের জন্যে রাজনীতি করে না। রাজনীতি করে দেশ, মানবতা ও ইসলামের কল্যাণের জন্য। জনগণের প্রত্যাশা ছিল ৫৩ বছরে যারা বারবার আমাদের বোকা বানিয়ে, ধোঁকা দিয়ে মাথায় নুন রেখে বরই খাওয়ার প্রবণতা দেখিয়েছে এর পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশ হবে কল্যাণকর সুন্দর রাষ্ট্র। এই দেশটা হবে বিশ্বের মধ্যে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকার রাষ্ট্র। এ জন্যই আমরা রাজনীতির মাঠে রাজনীতি করছি।
ছাত্র হত্যার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেধাবী সন্তানগুলো ন্যায্য অধিকার আদায়ে রাজপথে নেমেছিল, ঠান্ডা মাথায় গুলি করে পাখির মতো রাস্তায় লুটিয়ে ফেলা হয়েছে। এরা মানুষ নামে পশুর চেয়েও খারাপ।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একটিও এমপি সংসদে যায়নি। এর অর্থ কি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দুর্বল? বারবার ওরা আমাদের বোকা পেয়ে ধোঁকা দিয়ে সিঁড়ি বানিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে টুনটুনাটুন শব্দ ব্যবহার করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ওদের বারবার ধোঁকা, খুন, টাকা পাচারের জন্য সহযোগী শক্তি হতে চায়নি। এ জন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কখনো লেজুড়ভিত্তিক পরগাছা হতে চায়নি। আমরা পরগাছা কেন হবো। এ দেশ আমার, এ দেশ স্বাধীন করেছে ওলামায়েকেরাম। শাহজালাল, শাহপরান, খানজাহান আলীর জন্মভূমি। এ দেশে নাস্তিকরা মাথা উঁচু করবে আর মুসলমান দেবে থাকবে এটা হতে পারে না।
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ বলেন, খালিশপুর শিল্পাঞ্চল কারা বিরান ভূমিতে পরিণত করেছে? দেশের টাকা কারা পাচার করেছে? যারা মানুষ হত্যা করেছে তাদের বিচার করতে হবে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে তাদের বিচার করতে হবে। বিতর্কিত উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলার উদ্যোগে দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার এবং অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, বন্ধকৃত সব মিল-কারখানা চালু, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও খুলনা মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে এবং নগর সহসভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, নগর সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হুসাইন, জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালীবের যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হুসাইন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমেদ সাকী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল বশর আজিজী।