তারল্য ঘাটতি মেটাতে দুর্বল ৭ ব্যাংককে ৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে সবল ১০ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, গ্যারান্টি সহায়তা দিয়ে যে কোনো ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। সহায়তার পাশাপাশি ঋণ আদায়ে তাদের (ব্যাংকের) নিজস্ব কৌশল থাকা উচিত।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, তারল্য ঘাটটি মেটাতে দুর্বল সাত ব্যাংকে ৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে সবল ১০ ব্যাংক। এসব ব্যাংক থেকে চাওয়া হয়েছিল ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক। সবল সাত ব্যাংক থেকে ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ২ হাজার ৯৫ কোটি টাকা।
সহায়তা পাওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক সবল ছয় ব্যাংক থেকে পেয়েছে এক হাজার ১৭৫ কোটি টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক সবল ছয় ব্যাংক থেকে পেয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক ৯২০ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ৭০০ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংক ৪০০ কোটি এবং গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক পেয়েছে ২৯৫ কোটি টাকা।
যেসব ব্যাংক তারল্য সহায়তা দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক, বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক।
- আরও পড়ুন
লভ্যাংশ দিতে পারবে না মূলধন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংক
মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও কিছুদিন সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি রাখতে হবে
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্বল ব্যাংকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে। আমানতকারীদের স্বার্থ সবার আগে বিবেচনা করা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি সহায়তা দিয়ে যে কোনো ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। সহায়তার পাশাপাশি ঋণ আদায়ে তাদের (ব্যাংকের) নিজস্ব কৌশল থাকা উচিত। কিছু ব্যাংক ঋণ আদায়ে খুব ভালো করছে। তাদের মতো অন্যদেরও উদ্যোগী হতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহয়তার আশায় থাকা ঠিক হবে না।
এর আগে গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ১৭ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সঙ্গে সভা করেন। সভায় দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সহায়তা অব্যাহত রাখতে শক্তিশালী ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করেন গভর্নর।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ইসলামি ধারার শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে নগদ অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাংকগুলোতে শুরু হয় তারল্য সংকট। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, গ্রাহকরা ২০ হাজার টাকাই তুলতে পারছিলেন না। এ পরিস্থিতিতে গভর্নর সবল ব্যাংক থেকে দুর্বল ব্যাংকের নগদ টাকা ঋণ নেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করলে সবল ১০ ব্যাংক তারল্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে সম্মতি দেয়।
ইএআর/কেএসআর/জেআইএম