দুর্যোগ মোকাবিলায় নারী নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান

20 hours ago 6

বাংলাদেশে লিঙ্গ-সংবেদনশীল দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে নারীদের নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ লক্ষ্যে ব্র্যাক, জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন এবং সুইডিশ উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা সিডা-এর সহায়তায় ‘জেন্ডার রেসপন্সিভ ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন ইন বাংলাদেশ (জিআরডিআরআরআইবি)’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রকল্পের উদ্বোধনী কর্মশালায় সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী, সুশীল সমাজ, শিক্ষাবিদ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক বিধিনিষেধ ও পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধের কারণে নারীরা দেরিতে আশ্রয়কেন্দ্রে যান। ভিড়াক্রান্ত আশ্রয়কেন্দ্রে গোপনীয়তা, আলোক স্বল্পতা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের অভাব তাদের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। দুর্যোগকালে সহিংসতার শিকার হওয়ার আশঙ্কাও বহুগুণ বেড়ে যায়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আবদুল ওয়াদুদ বলেন, দুর্যোগে প্রাণহানি কমলেও অর্থনৈতিক ক্ষতি এখনও অনেক বেশি। কার্যকর প্রস্তুতি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দুর্যোগ ঝুঁকি বিমা চালু ও যথাযথ অর্থায়ন জরুরি।

ইউএন উইমেনের ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ নবনিতা সিনহা বলেন, বাংলাদেশকে দুর্যোগ মোকাবিলায় অগ্রণী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। স্থানীয় পর্যায়ে নারীরা এরইমধ্যে সম্মুখসারিতে আছেন। এখন তাদের নেতৃত্বের স্তরে উন্নীত করতে হবে।

সুইডেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি মাতিলদা স্ভেনসন বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেন্ডার সমতা কোনো ঐচ্ছিক বিষয় নয়, এটি অপরিহার্য। সব পরিকল্পনায় নারীর দৃষ্টিভঙ্গি ও তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী গোলাম তৌসিফ বলেন, নারীদের নেতৃত্ব দক্ষতার উন্নয়ন জরুরি।

এ সময়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী- বিশেষত নারী, শিশু, প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ব্র্যাকের পরিচালক ড. মো. লিয়াকত আলী বলেন, স্থানীয় প্রেক্ষাপট ও জনগণের অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দুর্যোগ প্রস্তুতি শক্তিশালী করা হবে।

এ প্রকল্পের লক্ষ্যগুলো হলো-

১. জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের নীতিমালা ও কার্যক্রমে লিঙ্গভিত্তিক সমতা যুক্ত করা।

২. সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনগণের সক্ষমতা বাড়ানো।

৩. ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

৪. জেন্ডার ইন হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাকশন (জিআইএচএ) ওয়ার্কিং গ্রুপসহ সমন্বয় কাঠামোকে শক্তিশালী করা।

প্রকল্প বাস্তবায়নের এলাকা-

২০২৫ সালের আগস্ট থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কুড়িগ্রাম, জামালপুর, সুনামগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, ভোলা, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, খুলনা ও সাতক্ষীরায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

এসইউজে/এএমএ

Read Entire Article