তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেছেন, দেশের সব হত্যা, গুম, খুন, আয়নাঘরের দায় শেখ হাসিনার। ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন সংস্থা ও দলের মাফিয়াদের দিয়ে ১৫ বছর তা করিয়েছেন। শেখ হাসিনা সাড়ে ১১ বছর ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে দলের গডফাদারদের রক্ষা করেছেন।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটে উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪০ মাস উপলক্ষে আলোক প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়।
রফিউর রাব্বি বলেন, ‘শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরে বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার কারণে আবার আজকে ত্বকী হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা জানি না ওসমান পরিবারের খুনি-মাফিয়ারা দেশে আছেন না পালিয়েছেন। গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্ব তা বের করা। তাদের আইনের আওতায় এনে সুবিচার নিশ্চিত করা। তারা দেশ থেকে পালালে সে দায়ও সংস্থার।’
তিনি বলেন, ‘শামীম ওসমান হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করলেও দুদক কখনো তার বিরুদ্ধে তদন্তও করেনি। অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশের আইন প্রণেতা হলেও দুদক তা দেখে না। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে দুদকের টনক নড়ে। গত ১৯ জুলাই শামীম ওসমান তার ছেলে, শ্যালক, বেয়াই, আত্মীয়-স্বজনসহ দু-তিনশ সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী নিয়ে প্রকাশ্যে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়লো। তাদের কেউ গ্রেফতার হলো না। তাদের অনুগত বাহিনীর অনেকেই বহাল তবিয়তে এখনো বিরাজ করছে।’
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সামাজিক সংগঠন সমমনার উপদেষ্টা দুলাল সাহা, খেলাঘর আসরের সাবেক সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সাংবাদিক হালিম আজাদ ও গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল ইসলাম সুজনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ শহরের শায়েস্তা খান রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে স্থানীয় সুধীজন পাঠাগারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় এবিসি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী (১৭)। পরে ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন।
পরে ওই বছরের ১৮ মার্চ ত্বকী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, জেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা জহিরুল ইসলাম পারভেজ ওরফে ক্যাঙারু পারভেজ, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাজীব দাস, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, সালেহ রহমান সীমান্ত ও রিফাত বিন ওসমানসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন ত্বকীর বাবা।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসআর/এএসএম