দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার আদিযোগী শিবমূর্তি গাইবান্ধায়

15 hours ago 2
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার কোমরপুর ইউনিয়নের মধ্যরামচন্দ্রপুর শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ ও কালী মন্দিরটিতে এখন স্থানীয় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভিড় করছেন পূর্ণার্থীরা। বিশাল এলাকাজুড়ে নির্মিত এ মন্দির চত্বর দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার কারণে ইতোমধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষের কাছে তীর্থস্থানের মর্যাদা পেতে শুরু করেছে।  জানা গেছে, এ মন্দিরে স্থাপন করা হয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আদিযোগী শিবমূর্তি, যা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম। ২৮ ফুট উচ্চতার এ মূর্তির ওজন ৩ টন। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা এ গ্রামের বাসিন্দা শ্রী হরিদাস বাবু। তিনি নিজেই মূর্তির নকশা তৈরি করেন এবং কারিগর মালাকর বিধান মহন্তের নিপুণ দক্ষতায় তা তৈরি করেন। আদিযোগী রূপে শিবের এ মূর্তিটি দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এখন তৈরি হচ্ছে ৫৩ ফুট উচ্চতার কৃষ্ণমূর্তি যার বেশিরভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মন্দির সংশ্লিষ্টদের দাবি, এটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ উচ্চতার মূর্তি হবে। মন্দিরসেবক শ্রী টগর দেবনাথ বলেন, প্রতিদিন এ মন্দিরে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ আসেন। এমনকি বিশেষ করে বৃহস্পতি ও শুক্রবার অথবা বিশেষদিনে ৩০-৪০ হাজার মানুষও মন্দিরে আসে। তাদের জন্য রয়েছে অন্যান্য সেবার পাশাপাশি থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা। যার বিনিময়ে কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয় না। গ্রামবাসী, স্বেচ্ছাসেবকরা সার্বক্ষণিকভাবে এ দর্শনার্থীদের সেবা দেন। মন্দিরে বিনোদনের জন্য রয়েছে সুইমিংপুল এবং কৃত্রিম পাহাড় ও শিশুপার্ক। অসহায় নারী-পুরুষের জন্য বৃদ্ধাশ্রমের কার্যক্রমও এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এমন মন্দির পেয়ে পূর্ণার্থীরা খুশি।  দিনাজপুর থেকে আসা পল্লবী রানী নামের একজন বলেন, শুনেছি ১৪৪টি মন্দির নির্মিত হচ্ছে। ফেসবুকে দেখেছি বিশাল আকৃতির আদিযোগী শিবমূর্তি। এ মূর্তি দেখেই মন্দিরে এসেছি। মন্দিরটি ভারতের বৃন্দাবনের মতো লাগছে। এখানে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। স্থানীয় শিবলু দাশ বলেন, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এ মন্দিরে মানুষ আসছেন। এতে আমাদের এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যও ভালো হয়েছে। মানুষের ভিড় দেখে আমরা খুব আনন্দ ও শান্তি পাই। সেই সঙ্গে মন্দির প্রতিষ্ঠাতা শ্রী হরিদাস বাবুকে জানাই ধন্যবাদ। তার কারণে আমাদের গাইবান্ধাকে চিনছেন অনেক দূরদূরান্তের মানুষ। মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিপুল চন্দ্র বর্মন কালবেলাকে বলেন, মন্দিরটি প্রথম অবস্থায় ৭৬ শতাংশ জমির উপরে স্থাপিত হয়েছিল। পরবর্তীতে আরও ৬২ শতাংশ জমি যুক্ত করা হয়। প্রচার বিমুখ হরিদাস বাবু নেপথ্যে থেকে এসব কাজের নেতৃত্ব দেন। এখন পর্যন্ত মন্দিরটিকে নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। অবশিষ্ট যে কাজগুলো রয়েছে তা করতে আরও বিপুল অর্থ ব্যয় হবে। সবার সম্মিলিত উদ্যোগে এ মন্দিরটিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। মন্দির প্রতিষ্ঠাতা শ্রী হরিদাস বাবু কালবেলাকে বলেন, এখানে সর্বমোট ১৪৪টি মন্দির তৈরি হবে। তবে বর্তমানে পাঁচটি মন্দির তৈরি হয়েছে, যা দৃশ্যমান। তবে দ্রুত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মন্দিরটি আরও উন্নত করা সম্ভব।
Read Entire Article