দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু, বয়স ৫৪ হবে। ২০ বছর কখনও মাথা তুলে আকাশ দেখতে পারেননি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে না পারলেও অর্থনৈতিক সংকট দূর করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে আজ। চুরি ডাকাতির শোকে আরও নুইয়ে পড়েছেন তিনি।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বারপাড়া গ্রামের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা দেলোয়ার। তিনি কারো কাছে হাত পাততে নারাজ। তাই ব্যবসা করে চলতে চেয়েছেন। পরপর তিনবার দোকানে চুরি হওয়ায় তিনি ভেঙে পড়েছেন।
রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, খাবার খেয়ে তিনি বাড়ি থেকে ফিরছেন। কুঁজো হয়ে গেছেন। লাঠি ভর দিয়ে হাঁটছেন। এক নজর দেখলে যে কারো মায়া লেগে যাবে। তিনি কারো কাছে হাত না পেতে ব্যবসা করে চলতে চেয়েছিলেন। দোকানের তালা খুলতেও তার কষ্ট হয়। দোকানের ভেতরে তার সিটটা অনেকটা বিছানার মতো।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, ২০ বছর বয়সে টাইফয়েডে তিনি কুঁজো হয়ে গেছেন। ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারেন না। দোকানটি দিয়ে টেনেটুনে তিনি পরিবার চালিয়ে নিচ্ছিলেন। তিনবার চুরি হওয়ায় চরম বিপদে পড়েছেন। তার দুই লাখ টাকার মতো ঋণ হয়ে গেছে।
দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী পাখি আক্তার বলেন, আমাদের তিন ছেলেমেয়ে। টানাটানির সংসার। তার মধ্যে দোকানে চুরি হয়ে যাওয়ায় না পারি মালামাল তুলতে না পারি সন্তানদের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে। একটু সহযোগিতা পেলে আমাদের পরিবারটির কষ্ট কমে যাবে।
এলাকার শিক্ষানুরাগী মো. আবদুস সামাদ বলেন, দেলু ভাই আমাদের প্রতিবেশী। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী, তাকে দেখলে যে কারোর মায়া হবে। কেউ দানও করতে চাইবেন।
তবে তিনি আত্ম মর্যাাদান সম্পন্ন মানুষ। তাই কষ্ট করে হলেও ব্যবসা দিয়ে পরিবার চালাচ্ছিলেন। দোকান চুরি হওয়ায় তিনি পরিবার নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন। আমরা সাধ্যমতো সহযোগিতা করছি। কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি সহযোগিতার হাত বাড়ালে পরিবারটির কষ্ট কমে যাবে।
জাহিদ পাটোয়ারী/এমআরএম