দৌলতদিয়ায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি

15 hours ago 3
টানা ১৪ ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকেও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় নদী পারাপার হতে পারেননি ফরিদপুরের বোয়ালমারির মন্টু ড্রাইভার। তবে কখন নদী পার হতে পারবেন এটাও তার কাছে অনিশ্চিত।  তিনি বলেন, আমি ফরিদপুরের বোয়ালমারি থেকে পাটবোঝাই করে দৌলতদিয়া ঘাটে এসেছি সোমবার রাত ১২টায়। এখন মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা বাজে। এখনো নদী পার হতে পারলাম না। এদিকে, ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। দৌলতদিয়া ঘাটে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র জানজটের। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীসহ চালকরা। মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের তীব্র সারির সৃষ্টি হয়েছে। পদ্মায় প্রচণ্ড স্রোত থাকায় নদীতে ফেরি চলাচলে আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগছে। এতে বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন বয়স্কসহ শিশুরা। জানা গেছে, দৌলতদিয়া প্রান্তে কাগজ-কলমে মোট ৭ টি ফেরিঘাট থাকলেও ৩টি ফেরিঘাট সচল ছিল। এরপর বন্ধ হয়ে যায় আরেকটি ঘাট। কিন্তু পদ্মায় স্রোতের কারণে এবং সোমবার রাত ১২টার পর থেকে ৩ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের প্লেট ভেঙে যাওয়ায় ঘাটটি সাময়িক বন্ধ থাকে। এখন এই বন্ধ ঘাটটি সচল করার জন্য কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। ৭, ৪, ও ৩ নম্বর ফেরিঘাটের মধ্যে বর্তমানে ৪ নম্বর ঘাটটি সচল আছে।  বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়ায় ৭টি ফেরিঘাটের মধ্যে ১, ২, ৫ ও ৬ নং ফেরিঘাট দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ৩, ৪ ও ৭নং ফেরিঘাট জরাজীর্ণ অবস্থায় চলছিল। এরমধ্যে পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে গত মাসের ২৩ আগস্ট থেকে ৭ নম্বর ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট সচল থাকলেও ৩ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের প্লেট ভেঙে যাওয়ায় সোমবার রাত ১২টা থেকে ঘাটটি মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। শুধু ৪ নম্বর ঘাট সচল থাকায় একটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। এতে করে যানবাহনের সিরিয়াল তৈরি হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি পাটুরিয়া ঘাটের (ম্যানেজার মেরিন) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন কালবেলাকে জানান, দৌলতদিয়া প্রান্তে ৭টি ঘাটের মধ্যে ২টি সচল ছিল। তবে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনের প্লেট ভেঙে যাওয়ায় ঘাটটি সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। এখন মেরামতের কাজ চলছে। কিছুক্ষণের মধ্যে সেটিও সচল করা হবে। আমরা হেড অফিস ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম- ৭ ও ৫ নং ঘাট সচল করার জন্য। তবে তারা আমাদেরকে জানিয়েছে, কাজ চলছে। অতি দ্রুতই ৫ নম্বর ফেরিঘাট সচল করা হবে। কিন্তু একইসঙ্গে ৭ নম্বর ঘাট চালু করা দরকার বলে আমরা মনে করছি। বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নেপাল চন্দ্র দেবনাথ কালবেলাকে বলেন, ৩ নম্বর ঘাটে মেরামত কাজ চলছে। কিছুক্ষণ পরেই ঘাটটি পুনরায় চালু হবে। আমরা দৌলতদিয়া ৫ নং ফেরিঘাট পরিদর্শন করেছি, কাজ চলছে। ৭ নং ঘাটে চর পড়ায় সেখানে ড্রেজিং করার দরকার রয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন জানান, ফরিদপুরে চলমান আন্দোলনের কারণে ঘাট এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া প্রান্তে একটি মাত্র ফেরিঘাট সচল রয়েছে। অন্যান্য ঘাট সচল করার কাজ চলমান। এ নৌরুটে বর্তমানে ছোট বড় মিলে মোট ১০টি ফেরি চলাচল করছে।  গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন কালবেলাকে জানান, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে শুধুমাত্র ৪ নং ঘাট চালু আছে। অন্যান্য ঘাটগুলো বন্ধ থাকায় যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে।
Read Entire Article