ধর্ষকের হাতে নির্যাতন, চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেলো মাদরাসাছাত্রী

3 weeks ago 12

দীর্ঘ তিন মাস ধর্ষকের হাতে নির্যাতনে প্রথমে ডান চোখ হারায় ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের এক মাদরাসাছাত্রী। পরে অর্থাভাবে চিকিৎসা থেমে যায়। তবে মেয়েটিকে আর বাঁচানো যায়নি।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ বাড়িতে মারা যায় ওই মাদরাসাছাত্রী। ধর্ষণে অভিযুক্ত কিশোর (১৭) একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও দশম শ্রেণির ছাত্র।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতো অভিযুক্ত কিশোর। গত ১ জুন প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় মেয়েটিকে দলবলসহ উঠিয়ে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যায় সে। ওইসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে থানায় গিয়ে কোনো ধরনের আইনি সহায়তা পায়নি মেয়েটির পরিবার। তার সন্ধানও পাওয়া যায়নি। গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে মেয়েটিকে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় অভিযুক্ত কিশোর।

খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখান থেকে ময়মনসিংহ ও পরে ঢাকার আগারগাঁও চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে বাম চোখ বাঁচাতে আঘাতপ্রাপ্ত ডান চোখটি উঠিয়ে ফেলা হয়, যা বর্তমানে মেয়েটির বাড়ির ফ্রিজে সংরক্ষিত রয়েছে।

এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হলেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি। সোমবার দুপুরে নিজ বাড়িতে মারা যায় ওই মাদরাসাছাত্রী।

আহাজারি করতে করতে মারা যাওয়া কিশোরীর মা বলেন, “আমার মেয়ে মারা যাওয়ার আগেও আমাকে বলছে, ‘আম্মা, আমার কাছে *** (অভিযুক্ত) চোখটা আইনা দেও। আমার দম যাওয়নের আগে দেইখ্যা যাইতাম চাই। আমি এর বিচার চাই।”

নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ আহম্মেদ জানান, মরদেহটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি নিয়ে আদালতে মামলা হলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব পায়। তারাই তদন্ত করছিলেন। এখানে আমাদের অন্য কিছু করার ছিল না।

এ বিষয়ে পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার বলেন, আমাদের মতো করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নিহতের পরিবার ইচ্ছা করলে থানায় হত্যা মামলা করতে পারে।

এসআর/এমএস

Read Entire Article