যশোরে ‘ধর্ষণচেষ্টা করায়’ মারপিটের শিকার বেয়াই সিরাজুল ইসলাম কুটির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, বেয়াই সিরাজুল ইসলাম কুটি (৪৫) শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে। শনিবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর জেস গার্ডেন পার্ক এলাকায় এই মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনা নিয়ে উভয়ের পরিবার ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, শনিবার দুপুরে বেয়াই সিরাজুল সদর উপজেলার বাহাদুরপুর জেস গার্ডেন পার্ক এলাকায় এক বেয়াইনের বাড়িতে যান। এরপর হঠাৎ ওই বাড়ি থেকে মারামারি ও কান্নাকাটির শব্দ পাওয়া যায়। পরে প্রতিবেশিরা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, একে অন্যকে লোহার পাইপ দিয়ে মারপিট করছে। এর মধ্যে সিরাজুলের এক চোখ ক্ষতবিক্ষত দেখতে পান। এছাড়া ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানেও জখমের দাগ দেখা যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের নিবৃত্ত করেন এবং গুরুতর অবস্থায় সিরাজুলকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। সিরাজুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে ওই নারী নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
হাসপাতালে সিরাজুল ও তার স্বজনেরা অভিযোগ করেন, পূর্বশত্রতার জের ধরে হাসি ও তার মেয়ে মনিকা এবং হাসির আরেক জামাতা মনিরুল মিলে সিরাজুলকে শাবল দিয়ে মারপিট করেন। এছাড়া চোখেও গুরুতর জখম করেন।
অন্যদিকে ওই নারী অভিযোগ করেন, সিরাজুল দীর্ঘদিন ধরে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ‘তাকে ধর্ষণচেষ্টা’ করেন। আত্মরক্ষার সময় তার হাতে সিরাজুলের চোখে লাগে। এছাড়া তাকেও মারপিট করা হয়েছে বলে তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন।
যশোর হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিমাদ্রী শেখর সরকার জানিয়েছেন, আহতের দুটি চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। যা এখানে সেবা দেওয়া সম্ভব না। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছিল।
এদিকে, সিরাজুলের মৃত্যুর পর রোববার এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় ওই নারীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত বলেন, মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পায়, সিরাজুল চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় সিরাজুলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় দায়ের করা মামলায় ওই নারীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মিলন রহমান/এমআরএম