ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ওসি-এসআইসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গৃহবধূকে আটকে ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজবাড়ীর পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও উপপরিদর্শক (এসআই) হিমাদ্রি হাওলাদারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন। বিচারক শেখ মফিজুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুর কার্যালয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে পুলিশ বলছে, মামলার বাদী পাংশা মডেল থানার একটি অপহরণ মামলার আসামি। তৃতীয় পক্ষের প্ররোচনায় পুলিশের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা করেছে। মামলার বাদী গৃহবধূর বাড়ি পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের লক্ষণদিয়া গ্রামে।
ওসি-এসআই ছাড়াও মামলার আরেক আসামি হলেন পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামের এতেম শেখের ছেলে আরিফ হোসেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ২ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নির্দেশে এসআই হিমাদ্রি হাওলাদার ও সহযোগী আরিফ হোসেন ওই গৃহবধূর বাড়িতে যান। এ সময় এসআই হিমাদ্রি ও সহযোগী আরিফ হোসেন ওই গৃহবধূর বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে তার স্বামীকে খোঁজার অযুহাতে তল্লাশি চালান। একপর্যায়ে তার স্বামীকে না পেয়ে তারা গৃহবধূকে জাপটে ধরে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
এরপর তারা ওই গৃহবধূকে টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করার সময় তিনি ওয়ারেন্ট দেখতে চান। এ সময় তারা জানান, ওসির নির্দেশে ওয়ারেন্ট ছাড়াই তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পরে তাকে থানায় এনে শারীরিক, মানসিক ও দৈহিক নির্যাতন চালানো হয়।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, স্বামীসহ স্বজনরা ওই গৃহবধূকে ছাড়িয়ে আনার জন্য থানায় গেলে ওসি, এসআই ও সহযোগী আরিফ তাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে মুচলেকার মাধ্যমে গৃহবধূকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে তাদের দাবি করা মোটা অঙ্কের টাকা না দিলে গৃহবধূর স্বামীকে গ্রেপ্তার করে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।
রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাভোকেট জাহিদ উদ্দিন মোল্লা বলেন, ট্রাইব্যুনালের বিচারক গৃহবধূর দায়ের করা মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুর কার্যালয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, বাদী অপহরণ মামলার আসামি। পুলিশের কাজকে বিঘ্নিত করার জন্য এবং মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তৃতীয় পক্ষের প্ররোচনায় পুলিশের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছে, যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।