ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল, গ্রেফতার ৩

6 hours ago 5

গণধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তারা হলেন- মো. মাসুম (২৫), মো. শরীফ (২৩) ও মো. ইস্রাফিল (২২)।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ১৫ দিন আগে যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামের মাধ্যমে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় চক্রটির মূলহোতা মাসুমের। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। প্রেমের সূত্র ধরে গত ১১ জানুয়ারি ওই নারীকে কাজলারপাড় এলাকায় এক বাসায় ডেকে নেন মাসুম। সেই বাসায় প্রথমে তাকে ধর্ষণ করে মাসুম। পরে তার দুই বন্ধু ইস্রাফিল ও শরীফ ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে।

তিনি বলেন, গ্রেফতাররা ধর্ষণের আপত্তিকর ভিডিও দেখিয়ে ভুক্তভোগী নারীর কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। তখন ভুক্তভোগী নারী সঙ্গে থাকা সাড়ে ৯ হাজার টাকা দেন। পরে অভিযুক্তরা ওই নারীকে একটি ভাড়া করা মোটরসাইকেলে তুলে দিয়ে চাহিদা মোতাবেক টাকা নিয়ে আসার কথা বলে। অন্যথায় ধারণ করা ভিডিও পরিবারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। গত ১৫ জানুয়ারি ইস্রাফিল ওই নারীকে ফোন করে জানান ১৭ জানুয়ারি মাসুম তার বন্ধুদের নিয়ে সাকরাইন অনুষ্ঠান করবে এবং সেখানে তাকে যেতে হবে। না গেলে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এসময় কৌশলের অংশ হিসেবে ওই নারী তাদের কথায় রাজি হয় এবং বিষয়টি যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশকে অবগত করে।

ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পরে ১৭ জানুয়ারি ওই ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কৌশলে যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় যাত্রাবাড়ীর ফলবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইলফোন ও ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে নেওয়া আট হাজার ৬৫০ টাকা জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের পরপ্রেক্ষিতে যাত্রাবাড়ী থানায় ধর্ষণসহ পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে গ্রেফতাররা। তারা সংঘবদ্ধ একটি চক্রের সদস্য। তারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অ্যাপসের মাধ্যমে নারীদের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে এবং সেই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। পরে ভিডিও পরিবারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চাহিদা মোতাবেক অর্থ হাতিয়ে নেয়।

গ্রেফতার মাসুম এ পর্যন্ত এমন ১৬টি ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। কোনো ভুক্তভোগী এসব ঘটনায় অভিযোগ না করায় তারা এতদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল বলে জানান ডিসি তালেবুর রহমান।

টিটি/এমএএইচ/জেআইএম

Read Entire Article