গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের ঘোষণায় উত্তেজিত ছাত্র-জনতা রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত শেখ মুজিবের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। বুধবার রাত ৮টার দিকে এই ভাঙচুর শুরু হয়। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘বুলডোজার মিছিলের’ ডাক দেয়।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ভাঙচুরের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে স্মরণ করলেন প্রবাসী সাংবাদিক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট ইলিয়াস হোসেন। ইলিয়াস বলেছেন, এই ভাঙচুর খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের করে দেয়ার ফল।
বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ৯টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে ইলিয়াস লেখেন – ‘৩২ নম্বরে যা চলছে সেটাই খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের করে দেয়ার ফল।’ এর আগে আরও একটি স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘ভাইয়েরা আমার, ৩২ নম্বরে একটা ইটও যেন অবশিষ্ট না থাকে।’
এর আগে শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের ঘোষণা আসার ঘটনায় এর পাল্টা কর্মসূচী ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর নেতাকর্মীরা ঘোষণা করেন, শেখ হাসিনা কোনো বক্তব্য দিলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
বুধবার বিকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। রাত ৮টায় শাহবাগ থেকে এ মিছিল শুরু করার কথা থাকলেও বিকাল থেকেই ধানমন্ডি ৩২ এলাকায় জড়ো হতে থাকে ছাত্র-জনতা। সন্ধ্যা হতে হতে সেখানে ব্যাপক জনসমাগম দেখা যায় এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা স্লোগান দিতে শোনা যায়।
একপর্যায়ে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে ভাঙচুর শুরু করে। উত্তেজিত ছাত্র-জনতার উপস্থিতি ও ভাঙচুরের কারণে ৩২ নম্বরের আশপাশের বিপণিবিতানগুলো বন্ধ হয়ে যায় দ্রুত। একপর্যায়ে ওই সড়কে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।
কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা জনতা বলছেন, ‘এই বাড়ি স্বৈরাচারের তীর্থভূমি হিসেবে চিহ্নিত। বুলডোজার দিয়ে আজ স্বৈরাচারের এই চিহ্ন মুছে দেওয়া হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেওয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি। পরে সন্ধ্যায় ফেইসবুকে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।’