সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনলাইনে বক্তব্য প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। একপর্যায়ে এক্সকাভেটর দিয়ে বাড়িটি ভাঙা হয়।
এ ঘটনার পর ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কথিত ‘আয়নাঘর’ থাকার দাবি তোলে। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা ওই ‘আয়নাঘর’-এর দৃশ্য দাবি করে প্রচার করা হয়।
তবে এ তথ্য সঠিক নয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের কথিত আয়নাঘরের নয়, বরং এটি ভিন্ন একটি দেশের খনির দৃশ্য।
ওই ভিডিওর বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ৩০ জানুয়ারি ‘Tata Jean’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত একই ভিডিওর দীর্ঘ সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়। অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, এর ব্যবহারকারী হাইতিতে বসবাস করেন।
ভিডিওটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, এটির শুরুতেই একটি পাহাড়ি বা বনাঞ্চলীয় এলাকায় অবস্থিত গুহার প্রবেশদ্বার দেখা যায়। তবে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোতে সেই অংশটি কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ভিডিওর ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের দৃশ্যে একটি গাধা এবং ২ মিনিট ৩ সেকেন্ডের দৃশ্যে কয়েকজন খনি-শ্রমিককে দেখা যায়। এসব উপাদান ইঙ্গিত দেয় যে ভিডিওটি মূলত একটি খনির।
অর্থাৎ ভিন্ন দেশের একটি খনির ভিডিও কাটছাঁট করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কথিত ‘আয়নাঘর’ হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।
তা ছাড়া ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কথিত আয়নাঘর নিয়ে প্রচার শুরু হয় ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে। অথচ ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি অন্তত ৩০ জানুয়ারি থেকেই অনলাইনে রয়েছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির পাশে নির্মাণাধীন ভবনের ভূগর্ভস্থ চারটি তলা কোনো গোপন আটককেন্দ্র নয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবনটির এই অংশ মূলত গাড়ি পার্কিংয়ের গ্যারেজ হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছে।
সুতরাং ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের কথিত আয়নাঘর দাবিতে ভিন্ন দেশের একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।