ধামাকা শপিংয়ের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

2 months ago 9

 

গ্রাহকের প্রায় ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা শপিং’-এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা প্রায় ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, ক্রোককৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস. এম. ডি. জসীম উদ্দিন চিন্তীর নামে রাজধানীর বনানী মডেল টাউনের ৩ ও ২/এ নম্বর রোডে অবস্থিত ১৪ নম্বর প্লটে নির্মিত একটি বহুতল ভবন (৫ কাঠা জমি), যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

এছাড়া, মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে গাজীপুরের কাশিমপুর পূর্ব বাগাবাড়ী এলাকায় ৪১ শতাংশ জমি (সি.এস ও এস.এ ১৪৫ নং দাগ; আর.এস ৩৬৫ নং দাগ), যার আনুমানিক মূল্য ১২ কোটি টাকা। সেটিও ক্রোক করা হয়েছে।

সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার আল মামুনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর দায়রা জজ আদালত এই সম্পত্তিগুলোর ওপর ক্রোকাদেশ প্রদান করেন।

তবে আসামিরা বর্তমানে সবাই দেশের বাইরে অবস্থান করছে। তারা আত্মসাৎকৃত অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করেছে বলে তদন্তে জানতে পেরেছে সিআইডি। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, ধামাকা শপিং নামীয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর এবং সিটি কর্পোরেশন থেকে কোনো বৈধ নিবন্ধন না নিয়েই অবৈধভাবে ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের ছত্রছায়ায় পরিচালিত হচ্ছিল।

প্রতিষ্ঠানটি স্বল্প মূল্যে পণ্য সরবরাহের প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার গ্রাহক ও সেলারদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। ধামাকা শপিং-এর নিজস্ব কোনো ব্যাংক হিসাব না থাকলেও তারা ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড–এর সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের হিসাব ব্যবহার করে লেনদেন পরিচালনা করতো।

সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও জানান, সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেখানে ধামাকা শপিংয়ের ব্যবসা সংক্রান্ত প্রায় ৫৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, অথচ ২০২১ সালের ২৭ জুন হিসাবটিতে মাত্র ৯৩ হাজার ৭৩১ টাকা স্থিতি ছিল— যা অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং আর্থিক জালিয়াতির প্রমাণ বহন করে।

সিআইডির তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ধামাকা শপিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত অর্থ প্রতিষ্ঠানের এমডি চিন্তীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। এমনকি মাইকো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজের অ্যাকাউন্টেও এসব অর্থ অবৈধভাবে হস্তান্তর করা হয়, যা মানি লন্ডারিংয়ের শামিল।

আসামিরা বর্তমানে সবাই দেশের বাইরে অবস্থান করছে। তারা আত্মসাৎকৃত অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করেছে বলে তদন্তে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান করছে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একটি দল।

টিটি/জেএইচ

Read Entire Article