ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে চট্টগ্রাম

2 months ago 36

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলা অস্থির অবস্থার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে চট্টগ্রাম। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় সড়কে বেড়েছে গণপরিহনের উপস্থিতি।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে গণপরিবহন চলাচল শুরু হলেও ব্যক্তিগত পরিবহনের সংখ্যা ছিলো কম। খুলেছে বিভিন্ন দোকানপাট ও মার্কেট।

সকাল ১০টার দিকে বহদ্দারহাট এলাকার ফল বিক্রেতা জানে আলম বলেন, আন্দোলনকে ঘিরে প্রায় প্রতিদিনই বহদ্দারহাটে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এক দোকান মালিক ও এক কর্মচারী নিহত হয়েছেন। তাই আমরা ব্যবসা করতে পারিনি। আজ অনেকটা নির্ভার লাগছে, দেশে শান্তি ফিরছে।

নগরের চকবাজার এলাকায় দেখা যায়, খুলেছে মার্কেট ও দোকানপাট। তবে ক্রেতা উপস্থিতি তেমন নেই। তবে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন দ্রুতই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

এদিকে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে চট্টগ্রামে গ্রেফতার শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের মুক্তির খবরে চট্টগ্রাম কারাগারে ভিড় করছেন স্বজনরা।

এদিকে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে থানা, ভিন্ন ধর্মালম্বীদের উপাসনালয়, মন্দির ও গির্জা রক্ষায় রাত থেকে পাহারা বসিয়েছেন শিক্ষার্থীরা ও জনতা।

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল রাতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি দল প্রবর্তক এলাকার ইসকন মন্দির ও প্রবর্তক মন্দিরে যায়। তারা মন্দিরে দায়িত্বরত ও ধর্মগুরুদের সঙ্গে দেখা করে আশ্বাস দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের একটি দল সেখানে পাহারার ব্যবস্থা করে।

আজ দুপুরে নগরের পাঁচলাইশ থানায় গিয়ে দেখা যায়, ছাত্র-জনতার একটি দল থানা ভবন পাহারা দিচ্ছেন। অন্যদিকে, দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কোতয়ালি থানায় অবস্থান নিয়েছে সেনা সদস্যদের একটি দল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনকে ভুল প্রমাণ করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এসব হামলা চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। আমরা আমাদের সমন্বয়কদের সব থানা উপাসনালয়সহ সকল সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছি।

অন্যদিকে, নগরের হালিশহর এলাকা বিভিন্ন মন্দিরে পাহারা বসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জনতা।

ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে চট্টগ্রাম

সাংবাদিক নুর নবী রবিন বলেন, আমরা রাতেই প্রতিটি এলাকায় মন্দির ও গির্জা রক্ষায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাঠে আছি। বিপ্লব বেহাতের কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে ভিড় করছেন স্বজন ও সহপাঠীরা।

তাদের একজন সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাদিসুর রহমান বলেন, আমাদের ভাইরা আহত হয়ে হাসপাতালে থাকলেও পুলিশের ভয়ে দেখতে আসতে পারিনি। তাই বিজয়ের পর এলাম। এমন নৃসংসতা বাংলাদেশে যেন আর না ঘটে, সেটাই চাই।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার পর থেকে চট্টগ্রামে সহিংসতায় একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া অর্ধশতাধিক আহত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিক্ষুব্ধ জনতা ও দুর্বৃত্তরা হামলা চালায় চট্টগ্রামের থানা, পুলিশ কার্যালয়, সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের বাসায়।

এএজেড/এমআরএম/জিকেএস

Read Entire Article