নওগাঁয় ভুয়া চার পুলিশ সদস্যসহ গ্রেফতার ৬

1 hour ago 2

নওগাঁয় ভুয়া চার পুলিশ সদস্য এবং গণঅধিকার পরিষদের নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার। এর আগে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার চার ভুয়া পুলিশ সদস্য হলেন ঢাকার উত্তর ভাটারা এলাকার আবুল বাসার শরিফের স্ত্রী সাবরিনা (২৯), নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ পূর্বাচল এলাকার হাজী আহম্মেদের ছেলে সাইফুল ইসলাম জিন্নাত (৪৫), রূপগঞ্জ কুলিয়াদি এলাকার গিয়াসউদ্দিনের ছেলে দ্বীন ইসলাম (৩৮) এবং ঢাকার রমনা থানার বড় মগবাজার এলাকার শুকুর শেখের ছেলে ফুল মিয়া (৪২)।

গণঅধিকার পরিষদের নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় গ্রেফতার দুজন হলেন নওগাঁ শহরের মাস্টারপাড়া এলাকার মৃত নূর ইসলামের ছেলে মো. আরিফ (২৯) এবং শহরের মাদার মোল্লা বলিরঘাট এলাকার এমদাদুল হকের ছেলে ফরহাদ হোসেন ওরফে শোভন (২৯)।

পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ার জানান, বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের জলিল চত্বর চেকপোস্টে বগুড়া থেকে রাজশাহী অভিমুখী একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশি করলে মাইক্রোবাসে থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি ডেমো পিস্তল, দুটি শটগান, দুটি হাতকড়া এবং ডিএমপি ও ডিবি পুলিশের ইউনিফর্ম পাওয়া যায়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা মান্দা থানার গোবিন্দপুর এলাকায় শুটিংয়ের জন্য যাচ্ছেন বলে জানান। কিন্তু তারা কোথায় থাকবেন, কী শুটিং করবেন এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

পরবর্তী সময়ে তাদের মোবাইল তল্লাশি করলে একটি জিডির কপি পাওয়া যায়। পুলিশ আবারও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে তখন তারা বলেন, তাদের কর্মচারী নওগাঁর মান্দা থানার গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ এবং ডকুমেন্টস আত্মসাৎ করে পালিয়ে এসেছেন। সোহেল রানা এবং তার বাবা-মায়ের নামে তারা ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেছেন। সেই মামলার তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই মামলায় সোহেল রানা এবং তার বাবা-মাকে অপহরণ করার উদ্দেশ্যে তারা পুলিশের পোশাক ও শটগান নিয়ে তার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পরে তাদের চারজনের নামে নওগাঁ সদর থানায় অপহরণ মামলা করা হয়।

গণঅধিকার পরিষদের নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার দুজনের বিষয়ে পুলিশ সুপার জানান, নওগাঁ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে লাইভস্টক ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে কর্মরত এক নারী স্টাফের কাছে গিয়ে তারা নিজেদেরকে গণঅধিকার পরিষদের নেতা পরিচয় দেন। একপর্যায়ে তারা ওই নারী স্টাফকে আওয়ামী-সমর্থক তকমা দিয়ে তার কাছে চাঁদা দাবি করেন। ওই নারী স্টাফ তার চাচাতো ভাইকে চাঁদা দাবির বিষয়টি জানাযন। তার চাচাতো ভাই তখন গণঅধিকার পরিষদের পরিচয় দেওয়া নেতার মোবাইলফোনে চাঁদা দাবির বিষয়ে জানতে চান।

তখন তারা সামনাসামনি দেখা করতে বলেন। সামনাসামনি দেখা করলে গণঅধিকার পরিষদের পরিচয় দেওয়া ওই দুই ব্যক্তি জানান, ২০২২ সালে লিটন ব্রিজের নিচে চায়ের দোকানে রাজনৈতিক কারণে আরিফের (১ নম্বর আসামি) বাবাকে মারধরের ঘটনায় তিনি থানায় একটি মামলা করবেন। তাকে চাঁদা না দিলে ওই মামলায় আসামি হিসেবে ওই নারী স্টাফের নাম জুড়ে দেবেন এবং তার চাকরির ক্ষতি করবেন। এ কথা বলে তার কাছে এক লাখ ২৮ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার ওই টাকা দিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদারির লাইসেন্স করবেন বলেও তাদেরকে জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকীসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরমান হোসেন রুমন/এসআর/জেআইএম

Read Entire Article