নকভির বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ তুলতে প্রস্তুত বিসিসিআই

2 hours ago 4
দুবাইয়ে চলমান আইসিসি বোর্ড মিটিং ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই এবার বিসিসিআই (ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড) প্রস্তুত আরও এক ধাপ এগোতে—পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রধান মহসিন নকভির বিরুদ্ধে আনছে নতুন অভিযোগের ঝড়। ভারতীয় গণমাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী, বিসিসিআই এরই মধ্যে একটি অভিযোগের তালিকা প্রস্তুত করেছে, যা আইসিসি বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে। অভিযোগের মূল বিষয়—নকভির একসঙ্গে একাধিক সরকারি ও ক্রীড়া পদে অধিষ্ঠান। নকভি বর্তমানে শুধু পিসিবি চেয়ারম্যানই নন, তিনি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এএসিসি)-এর সভাপতি এবং পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বিসিসিআইয়ের দাবি, এটি আইসিসির সুশাসনবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। তবে এখানেই শেষ নয়। Telecom Asia Sport-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিসিআইয়ের এই অবস্থানে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি) সমর্থন জানিয়েছে। সম্প্রতি সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানের সামরিক হামলায় তিন আফগান ক্রিকেটার নিহত হওয়ার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়েছে। সে কারণে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকেও সরে দাঁড়ায় আফগানিস্তান। এক সূত্র জানায়, ‘আফগানিস্তান ভারতের অবস্থানকে সমর্থন দেবে। তারা চায় নকভি তার একাধিক পদ থেকে অন্তত একটি ছাড়ুন। তবে নাকভি পিছু হটার মানুষ নন।’ এদিকে, নকভি আইসিসি বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কি না, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ৬-৭ নভেম্বর তার সেনেটে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সংশোধনী বিতর্ক নির্ধারিত আছে। তবে Telecom Asia Sport জানিয়েছে, নকভি সম্ভবত ৭ নভেম্বর দুবাইয়ের আইসিসি বৈঠকে যোগ দেবেন, যদি সংসদীয় সূচির সঙ্গে সংঘর্ষ না হয়। আর যদি তিনি উপস্থিত থাকেন—তাহলে বিসিসিআই প্রথমেই তুলবে সেই বহুল আলোচিত এশিয়া কাপ ট্রফি বিতর্কের বিষয়টি। সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখে ভারত ফাইনালে পাকিস্তানকে হারানোর পর খেলোয়াড়রা নকভির কাছ থেকে ট্রফি গ্রহণে অনীহা দেখান, কারণ তিনি পাকিস্তানের মন্ত্রীও বটে। ট্রফিটি পরবর্তীতে এএসিসি কার্যালয়ে রয়ে যায়, যা এখনো ভারতের হাতে পৌঁছেনি। বিসিসিআই দাবি করছে, তারা একাধিকবার ট্রফি হস্তান্তরের অনুরোধ জানিয়েছে, কিন্তু নকভি নাকি জেদ ধরে বসে আছেন—ভারতীয় দলকে ট্রফিটি সরাসরি তার কাছ থেকেই নিতে হবে। পরে নকভি ৫ নভেম্বর দুবাইয়ে এক অনুষ্ঠানে ট্রফি হস্তান্তরের প্রস্তাব দেন, যা বিসিসিআই সোজাসাপ্টা প্রত্যাখ্যান করে জানায়—বিষয়টি তারা আইসিসি বৈঠকে তুলবে। অন্যদিকে, পিসিবির এক সূত্র নকভির পক্ষ নিয়ে জানায়, ‘এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে তিনি পুরোপুরি আইনসংগতভাবেই কাজ করেছেন। তা ছাড়া আইনি পরামর্শও নিয়েছেন নিজের অবস্থান মজবুত করতে।’ সব মিলিয়ে, দুবাইয়ের এই বৈঠক হতে পারে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ আইসিসি সভা। একদিকে বিসিসিআইয়ের চাপ, অন্যদিকে পিসিবির প্রতিরোধ—আর মাঝখানে এশিয়া কাপ ট্রফি হয়ে উঠেছে উপমহাদেশীয় ক্রিকেটের রাজনৈতিক প্রতীক।
Read Entire Article