নগর ব্যবসায়ীদের নয়, নাগরিকদের হাতে তুলে দিতে হবে

2 hours ago 3

২০০৯ সাল থেকে ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান বা ড্যাপ হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি, ব্যবসায়ীদের চাপেই বারবার পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই প্র্যাকটিস থেকে বের হয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘অ্যান আনসাস্টেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিশেষজ্ঞ ও নগরবাসীর মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। নগর ব্যবসায়ীদের হাতে নয়, নাগরিকদের হাতে তুলে দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের কতগুলো জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্বল। আমাদের আইন আছে। কিন্তু আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমরা খুবই পিছিয়ে আছি। আইন প্রয়োগের কাজটা আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক কমিটমেন্ট থাকলে সবকিছুই সম্ভব। তিন বছরের মধ্যে ঢাকায় সবুজায়নে বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব। এজন্য সমন্বিত পরিকল্পনা, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং নাগরিক সচেতনতা অপরিহার্য।

পূর্বাচলে ইকোসিস্টেম ভেঙে দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে মাওয়ার দিকে গেলে চোখে পড়বে অসংখ্য হাউসিং কোম্পানির সাইনবোর্ড। শত শত প্রকল্প হলেও ঘরবাড়ি খুবই কম। উত্তরায় প্লট দিয়ে ঘর তোলা হচ্ছে, পূর্বাচলে পুরো ইকোসিস্টেম ভেঙে সেখানে নতুন নগর গড়ে তোলা হয়েছে। এখনো পূর্বাচলে গেলে কিছুটা সবুজ দেখা যায়, তবে ২০ বছর পর এই সবুজ থাকবে না। এই অবস্থায় হিট স্ট্রেস কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, সেটাই বড় প্রশ্ন।

এমপি-মন্ত্রীদের প্লট দিতে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, রাজউকের উচিত সচেতন হওয়া। মন্ত্রী-এমপিদের ও তথাকথিত ভিআইপিদের প্লট দিতে গিয়ে যে ক্ষতি করা হয়েছে, এখন তার পথ বের করতে হবে। বিদেশের মতো পরিবেশবান্ধব বিল্ডিং প্ল্যান বাধ্যতামূলক করা জরুরি, ভেন্টিলেশন, আলো-বাতাস, সবুজ জায়গা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু ঢাকায় সবাই উল্টো চায়: যার ১২ তলা, তার ১৪ তলা চাই, যার ৮ তলা, তার ১০ তলা চাই। আমরা বিদেশের মত হতে চাই। কিন্তু তাদের রুলস মানতে চাই না। তাদেরকে অনুসরণ কিংবা তাদের মতো আইন মানতে চাই না।

তিনি বলেন, আমাদের শহরকে ডিসেন্ট্রালাইজেশনের কথাও ভাবা হচ্ছে না।

আজকের আলোচনায় এসেছে, বাংলাদেশে গড় তাপমাত্রা যেমন বাড়ছে, ঢাকায় তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বাড়লেও বাংলাদেশ ও ঢাকা শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় আছে। এর ফলে শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা ও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। পরিকল্পিত উন্নয়ন করলে আর্থিক ক্ষতি অনেকটা কমানো যেত।

এসব বিষয় আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে হিটওয়েভ এর সমাধান উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নকে শক্তিশালী করা। ঢাকার বাইরে ডিসেন্ট্রালাইজেশন ও কৃষিজমি ও বনভূমি সংরক্ষণ। কার্যকর পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চালু করা। প্রতিটি বিল্ডিংয়ে বাধ্যতামূলক সবুজায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

আরএএস/এসএনআর/জেআইএম

Read Entire Article