‘নজরুলের সাহিত্যকে প্রচলিত মাপকাঠিতে বিচার করা যায় না’

4 hours ago 7
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেছেন, নজরুলের সাহিত্যকে প্রচলিত মাপকাঠিতে বিচার করা যায় না। তিনি সমসাময়িক কবিদের থেকে আলাদা ছিলেন। কারণ, তিনি ছিলেন ‘অপর জনগোষ্ঠী’র প্রতিনিধি। ইংরেজ শাসনামলে যখন অনেকেই মুখ খুলতে পারেননি, নজরুল তখন ছিলেন প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিশেষ সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।  এ সেমিনারে ‘ঔপনিবেশিক আধুনিকতার ‘অপর’ ও নজরুল সাহিত্য’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সেমিনারটি আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল গবেষণা কেন্দ্র। তিনি বলেন, অনেকে বলেন, নজরুল খুব ভালো কবি নন, শুধু ব্রিটিশ বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কোন কবিতাকে আমরা কবিতা বলব, তার মাপকাঠি কী? নজরুলের ক্ষেত্রে তা ভিন্ন। ইংরেজদের ঔপনিবেশিক শাসনকালে যখন বাকিরা চুপ থেকেছেন, নজরুল তখন প্রতিবাদ করেছেন। ভারতের ঔপনিবেশিক শাসনের সঙ্গে তার ছিল বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, একসময় এ দেশের তরুণ প্রজন্মকে ফার্মের মুরগি বলা হতো, কিন্তু তারা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে, তারা নজরুলের সৈনিক। তাই তারা রাস্তায় রাস্তায় গেয়েছে— ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির’। নজরুল ছিলেন বিপ্লবের প্রতীক; ভারতবর্ষের একটি মাটিও তিনি পরাধীন রাখতে চাননি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ভিজিটিং অধ্যাপক মেহরান নাজ্জাফি হাজিবার বলেন, নজরুলের কাব্যরস আমাদের মনে করিয়ে দেয় হাফেজ, রুমি ও সাদির উত্তরাধিকারকে। তার কবিতা মানবতা, সহমর্মিতা ও জাগরণের প্রতীক। সেমিনারে রেজাউদ্দিন স্টালিন ও অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম যৌথভাবে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শারমিন মুস্তারী এবং অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নুরুল আমিনের হাতে নজরুল পুরস্কার তুলে দেন। নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের আয়োজনে ১৬ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নজরুল সপ্তাহে আয়োজিত কুইজ, কবিতা ও সংগীত প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের জন্যও পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। নজরুল কবিতা প্রতিযোগিতায় তিনজন, কুইজে তিনজন ও সংগীত প্রতিযোগিতায় চারজন পুরস্কৃত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ ফরিদুদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. ইকবাল শাহীন খান।
Read Entire Article