ইসরায়েলি জিম্মি শিরি বিবাসের পরিবার জানিয়েছেন, নতুন করে হামাস যে মরদেহটি ফেরত পাঠিয়েছে, তা শিরি বিবাসেরই।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে পরিবারের সদস্যরা বলেন, আমাদের শিরিকে বন্দিদশায় হত্যা করা হয়েছে। এখন সে ঘরে ফিরেছে। তবে, ইসরায়েলের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা মরদেহটি নিশ্চিত করতে আরও পরীক্ষা চালাচ্ছেন।
অপরদিকে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রেড ক্রসের মাধ্যমে নতুন মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খবর বিবিসি।
এর আগে এতদিন পর ফিরে আসা এই মরদেহের বিষয়ে তেল আবিব অভিযোগ করেছিল, ফেরত দেওয়া ৪টি কফিনের মধ্যে শিরি বিবাসের মরদেহ ছিল না। তার বদলে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির দেহ ছিল। এই অভিযোগের জবাবে হামাস জানায়, শিরি ও অন্যান্য জিম্মিরা ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছিলেন এবং তাদের দেহাবশেষ একসাথে মিশে গেছে।
হামাসের কর্মকর্তারা, বিশেষ করে ইসমাইল আল থাওয়াবতেহ, আরও জানান, শিরি এবং অন্যান্য জিম্মিদের যেখানে আটক রাখা হয়েছিল, সে ভবনটি ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে যায়। এর ফলে, শিরিসহ কয়েকজন জিম্মির দেহাবশেষ মিশে গিয়েছিল এবং আলাদা করে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার হামাস যে মরদেহটি হস্তান্তর করেছিল, ইসরায়েল জানায় সেটি একটি অজ্ঞাত নারীর ছিল এবং শিরি বিবাসের দেহ ছিল না। তবে শুক্রবার, হামাস এক নতুন বিবৃতিতে নিশ্চিত করে, শিরি বিবাসের দেহাবশেষ অন্যদের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে, শনিবার আরও ছয়জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে হামাস, যার বিনিময়ে ইসরায়েল ৬০৫ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
শিরির পরিবার জানিয়েছে, ১৬ মাস ধরে আমরা নিশ্চিত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছি। এখন আমরা সে নিশ্চয়তা পেলেও, এতে কোনো সান্ত্বনা নেই। তবে এটি আমাদের জন্য একটি সমাপ্তির শুরু হতে পারে বলে আশা করি।
হামাস আগেই দাবি করেছিল, শিরি ও তার দুই সন্তান ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, ফরেনসিক পরীক্ষায় দেখা গেছে যে শিরির দুই সন্তান, আরিয়েল ও কফি, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা’ করা হয়েছে। এসব প্রমাণ বিশ্বজুড়ে অংশীদারদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে, যাতে তারা এটি যাচাই করতে পারে।
শিরি বিবাস, তার স্বামী ইয়ারদেন বিবাস এবং দুই সন্তানকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল হামলার সময় অপহরণ করা হয়। পরে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি, ইয়ারদেন বিবাসকে জীবিত মুক্তি দেয় হামাস।
এই অপহরণ ও হামলার জবাবে, ইসরায়েল গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে, যার ফলে অন্তত ৪৮ হাজার ৩১৯ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। এটি একটি নৃশংস এবং ভয়াবহ সংঘাতের প্রতিচ্ছবি, যা এখনো চলমান।